সিলেটের জৈন্তাপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
উপজেলার হরিপুর বাজারে রোববার রাত ১টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়, যা সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ।
সংঘর্ষ থামলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তেজনা থামাতে সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান, পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনসহ রাজনৈতিক নেতারা।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, জৈন্তাপুর উপজেলার ৫ নম্বর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাউদপাড়া গ্রামের কিছু জমি নিয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রফিক আহমদ ও সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
এর জেরে রোববার রাত ১টার দিকে হরিপুর বাজারে শ্যামপুর ও হাউদপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে মারামারিতে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। দেশীয় অস্ত্রসহ এই সংঘর্ষ চলে সকাল ৮টা পর্যন্ত।
সোমবার সকাল ৭ টার দিকে হাউদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ মাওলানা সালেহ আহমদসহ কয়েকজন সংঘর্ষ থামানোর উদ্যোগ নেন। মধ্যস্থতার আলোচলনার সময় সালেহ আহমেদের ওপর হামলা চালায় একপক্ষ। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। সালেহ আহমদ স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক স্বজন জানান, সালেহ আহমদসহ আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল সমঝোতার জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে টিয়ারশেল ছুড়তে শুরু করে। এতে সবাই ছুটোছুটি শুরু করে। একপর্যায়ে সালেহ আহমদ মাটিতে পড়ে যান। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
ওসি বলেন, ‘পুলিশ সকালের দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। এখনও ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে সংঘর্ষে কতজন আহত হয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এলাকাবাসীকে শান্ত করতে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। যারা এই সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’