সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে ১০ বছর আগে জারি করা এক রুলের শুনানির উদ্যোগ নিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। দু-এক দিনের মধ্যে এই রুলের শুনানি হতে পারে।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদের আবেদনে রুল শুনানির এই উদ্যোগ নেয়া হয়।
মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত সঠিকভাবে করা এবং আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য ২০১২ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আমরা একটা রিট করেছিলাম।
‘সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিল। রুলে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমাদের পৃথক একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত র্যাবের কাছে চলে যায়। সেই থেকে এই ১০ বছরে এ মামলার চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এই কারণে রুল শুনানির জন্য আবেদন করি। আদালত রুল শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার মামলাটি তালিকায় আসতে পারে।’
হাইকোর্টের জারি করা রুলের জবাব এসেছে কি না জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো জবাব পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘ প্রায় শতবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় নেয়া হয়েছে। সেটির লাগাম টানার জন্যই আমরা রুলটি শুনানির জন্য আবেদন করেছি। হাইকোর্ট যখন একটা সময় নির্ধারণ করে দেবে, তখন হয়তো বার বার সময় নেয়ার আর সুযোগ থাকবে না।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ এরই মধ্যে ৮৭ বারের মতো পিছিয়েছে। পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে বিচারিক আদালত।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। পরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু গত ১০ বছরেও মামলার তদন্তে অগ্রগতির কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ মামলায় রুনির বন্ধু তানভির রহমানসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। আসামিদের প্রত্যেককে একাধিকবার রিমান্ডে নেয়া হলেও তাদের কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।