টেক্সটাইল কারখানায় এক কিশোর শ্রমিকের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি রাজু আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
শনিবার ভোর ৬টার দিকে কারখানায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৭ বছর বয়সী শ্রমিক অপু দেওয়ান। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আটক করা হয় সমবয়সী শ্রমিক রাজুকে।
নিহত অপুর বাবা পলাশ দেওয়ান শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। হত্যা মামলাটিতে একমাত্র আসামি করা হয়েছে অপুর সহকর্মী রাজুকে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, আসামি রাজুকে রোববার সকালে গাজীপুরের জেলা জজ আদালতে হাজির করা করা হয়। আদালতে রাজু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে বিচারক তার বয়স বিবেচনায় টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শ্রমিকরা জানান, টেক্সটাইল কারখানায় শনিবার ভোর ৬টার দিকে ছুটি হলে রাতে কাজ করা শ্রমিকরা বের হচ্ছিলেন। রিং বিভাগের নিচতলার মেঝেতে উচ্চগতির বাতাস বের হওয়া একটি কমপ্রেশার নল আছে। শরীরে লেগে থাকা তুলা পরিষ্কার করতে অনেকে এ নলের সহযোগিতা নেয়।
শরীরের তুলা পরিষ্কার করার সময় কিশোর শ্রমিক অপু দুষ্টুমির ছলে রাজুর পায়ুপথে নলটি চেপে ধরে। এরপর রাজু নলটি ছিনিয়ে নিয়ে অপুর পায়ুপথে জোর করে বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে অপু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অপুকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
কারখানার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুষ্টামির ছলে পায়ুপথে বাতাস ঢুকানোর ফলে শ্রমিক অপুর পেট ফুলে যায়। সে কথা বলতে পারছিল না, তার শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছিল। কারখানার ব্যবস্থাপনায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।’
অপুর বাবা পলাশ দেওয়ান বলেন, ‘অপু স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। করোনাকালে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে পরিবারের জন্য সে আনোয়ারা মান্নান টেক্সটাইল মিলে চাকরি নেয়। এ চাকরি করতে গিয়েই তার প্রাণ গেল।’
স্বজনরা জানান, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার পূর্ব শিয়ালদী এলাকায় অপুদের বাড়ি। বর্তমানে শ্রীপুরের মাস্টারবাড়ি এলাকায় সামাদ মিয়ার বাড়িতে তার পরিবারের বসবাস। সেখানে থেকেই কারখানায় কাজ করছিল অপু।