বাজারে যখন গরুর মাংসের দাম সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, তখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে মাংস, দুধ, ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হযেছে।
রাজধানীর ১০ স্থানে এসব ট্রাকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজিতে, আর ৮০০ টাকায় খাসির মাংস পাওয়া যাচ্ছে।
পুরো রমজানে রাজধানীর ১০টি এলাকায় এ সুযোগ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে মাংস বিক্রির এ কার্যক্রমের উদ্বোধনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে পাস্তুরিত তরল দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।
‘ভ্রাম্যমাণ বিপণনে ব্যবহৃত পরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ মানুষকে নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনোভাবেই যাতে খাবারে ভেজাল না আসে, খাবার যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর বা জীবাণুযুক্ত না হয় এ বিষয়টিতে খামারিদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। খাবার যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রি না হয় সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’
রমজান মাসে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির এ বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত রাজধানীর ১০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ এ বিপণন কার্যক্রম চালু থাকবে। প্রাথমিকভাবে সচিবালয়সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি গোলচত্বর, জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, কালশী এবং যাত্রাবাড়ীতে এই কার্যক্রম চলবে।’
তিনি জানান, ‘মাংস, দুধ এবং ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও সাপ্লাই চেইন সচল রেখে রমজান মাসে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখা আমাদের লক্ষ্য। চাহিদা ও দ্রব্যের সরবরাহ বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিসর বৃদ্ধির পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘গত বছর রমজান মাসে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং ডেইরি ও পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রি ব্যবস্থায় ৩৪ কোটি ৮৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১০ জন ভোক্তা এবং ৮১ হাজার ৩৭৭ জন খামারি সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।’
মন্ত্রণালয় থেকে এ ভ্রাম্যমাণ বিক্রির সব কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করা হবে। কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পদক্ষেপ এর আগে কেউ নেয়নি বলে জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘রমজান মাসে একজন লোকও যাতে কোনোভাবে কষ্ট না পায় সেটা সরকারের লক্ষ্য।’
করোনায় প্রাণিসম্পদ খাতের খামারি ও উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে বলে জানান শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স মওকুফের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে সরকার কোটি কোটি ছাড় দিলেও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জড়িতরা লাভবান হয়েছেন।
‘প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন, পরিবহন, বিপণন সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে আমরা সক্ষম হয়েছি। করোনায় দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গতি কোনোভাবেই যাতে স্থবির না হয়ে পড়ে সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন।’