বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই কৃষকের ‘আত্মহত্যা’: নলকূপের অপারেটর গ্রেপ্তার

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২২ ১২:১৫

গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনাথ মারান্ডি ও তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি। নিজেরাই পরিবারের সদস্যদের জানান, তারা বিষ খেয়েছেন। ওই দিন রাতেই নিজ বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। এরপর ২৫ মার্চ রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবি মারা যান।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই সাঁওতাল কৃষকের মৃত্যুতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গোদাগাড়ী উপজেলার চব্বিশ নগর এলাকা থেকে শনিবার রাত ১টার দিকে সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাখাওয়াত বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের অপারেটর এবং ইউনিয়ন কৃষক লীগ নেতা।

রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখার আলম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ৩৬ বছর বয়সী অভিনাথ মারান্ডি ও তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই ২৭ বছর বয়সী রবি মারান্ডি। নিজেরাই পরিবারের সদস্যদের জানান, তারা বিষ খেয়েছেন।

ওই দিন রাতেই নিজ বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। এরপর ২৫ মার্চ রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবি মারা যান।

দুজনেরই বাড়ি গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমঘুটু গ্রামে। অভিনাথ ও রবির পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অনেক ঘুরেও গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি পাচ্ছিলেন না তারা। তাই ক্ষোভে ওই নলকূপের সামনেই দুজনে বিষ পান করেন।

যা বলছে তদন্ত কমিটি

কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ২৭ মার্চ কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন।

২৯ তারিখ সকালে কমিটির সদস্যরা প্রথমে ওই গ্রামে বিএমডিএর গভীর নলকূপটি পরিদর্শন করেন। পরে তারা দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে কয়েকজনের সাক্ষ্য নেন। এরপর অভিনাথ ও রবির জমি পরিদর্শনে যান।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিনাথের বাড়িতে গিয়ে দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরিবারের সদস্যরা এদিনও অভিযোগ করেন, সেচের পানি না দেয়ার কারণেই দুই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।

তবে ইউপি কার্যালয়ে সাক্ষ্য দেয়া স্থানীয় কয়েকজন তদন্ত দলের কাছে দাবি করেন, পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সাওতাঁল কৃষকরা দেশীয় মদ পান করতেন। এ কারণেই তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। রবির ভাই সুশীল মারান্ডিও জানান, তারা মদ-তাড়ি খেতেন।

ওই দিন কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। হাতে সময় আছে। দুজনের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হলে অবশ্যই সেটি আসবে।’

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান জানান, মূলত পুলিশ আগে নিশ্চিত হতে চায় তারা দুজন কী খেয়ে মারা গেছেন। তারা বিষ পানেই আত্মহত্যা করেছেন নাকি অন্য কিছু খেয়েছিলেন। কারণ জানার ওপর নির্ভর করছে এই মামলা কোন দিকে যাবে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মৃতের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করেছি। কী খেয়ে তারা মারা গেছেন এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন ভিসেরা রিপোর্ট। এটি আমাদের এখানে হয় না।

‘ভিসেরা রিপোর্ট করার জন্য নমুনা পাঠাতে হয় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা সেখানে নমুনা পাঠব। সেই রিপোর্ট এলে আমাদের আরও যেসব তথ্য-উপাত্ত সেগুলো মিলিয়ে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয়া হবে।’

সিআইডির রাজশাহী ফরেনসিক ল্যাবের রাসায়নিক পরীক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, রিপোর্ট পেতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর