মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল এলাকার কামরুল হাসান জীবন-জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন ভারতে ছিলেন। সেখানে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা দেখতে পান তিনি। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাশরুম চাষের স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরে আসলেও তা স্বপ্নই থেকে যায়।
পরিবার ও স্থানীয়দের পরামর্শে গত বছরে প্রথমে মুরগির খামার করলেও চরম লোকসানে পড়তে হয় কামরুলকে। তাই আবারও মাশরুম চাষের স্বপ্ন পূরণ করতে মাগুরার ‘ড্রিম মাশরুম প্রশিক্ষণ সেন্টার’- এ ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপর নিজ বাড়িতেই একটি মাশরুমের খামার করেন।
নিজ স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি শত শত যুবকদের বেকারত্ব ঘুঁচিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছেন কামরুল।
মাশরুম চাষ নিয়ে স্থানীয় কৃষকসহ বেকার যুবকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে কামরুলের মাশরুমের খামার।
কামরুল বলেন, ‘ভারতে থাকার সময়ে মাশরুমের প্রতি একটা নজর ছিল। কিন্তু দেশে এসে প্রশিক্ষণ ছাড়া মাশুরুম চাষ করতে পারছিলাম না। পরে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি খামার গড়ে তুলি। এতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে আশার কথা হলো, আমি ইতোমধ্যে লাভ পেতে শুরু করেছি। আমার দেখানো পথে অনেক বেকার যুবকরাও এগিয়ে আসছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মাশরুম চাষে আগ্রহী করে তুলছি।’
একই গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, অনেকেই কামরুলের খামারের মাশরুম কিনে নিচ্ছেন। চাহিদা বেশি থাকায় কামরুলের মতো প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই মাশরুম চাষের খামার করতে আগ্রহী। আর সরকারি-বেসরকারিভাবে সাহায্য পেলে মাশরুম চাষ কালকিনিতে একটি নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।
উপজেলার অনেক পরিবার মাশরুমকে নিয়মিত খাদ্য তালিকায়ও রাখছে। কারণ মাশরুমে আছে ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ঔষধি গুণ। তাই দিনদিন এর চাহিদাও বাড়ছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘মাশরুম চাষে আগ্রহীদের ব্যাংক লোনের মাধ্যমে খামার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা হলে অন্যান্য বেকার তরুণ-তরুণীরাও স্বাবলম্বী হতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুরগির খামারসহ বিভিন্ন খামার করে যেসব কৃষক এখন হতাশ হয়ে পরেছেন, তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে মাশরুম চাষ। স্বল্প পুঁজিতে খামার করে সফল হওয়া যায় দেখে মাশরুম চাষ এখন বেকারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।’