বিয়ের আলাপের সূত্রেই পরিচয়। সেই সুবাদে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা থেকে এক নারীকে কথাবার্তা চূড়ান্ত করতে নন্দীগ্রামে ডাকেন কথিত পাত্র। ওই নারী সেখানে যাবার পর পড়েন প্রতারকদের খপ্পরে। সেই প্রতারক চক্রের সদস্যরা শেরপুর থেকে নন্দীগ্রাম যাওয়া সে নারীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ করেন বলে অভিযোগ করেন।
পুলিশ জানায়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে এমন ঘটনা ঘটেছে দাবি করে মামলা করলে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে তিন ব্যক্তিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ৪৫ বছরের শাহাদত হোসেন, নন্দীগ্রাম কলেজপাড়ার ৩৫ বছরের হযরত আলী ও ২৫ বছরের সুমন আলী।
‘ধর্ষণের’ শিকার ২১ বছরের ওই তরুণী শেরপুর উপজেলার বাসিন্দা।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, মাসখানেক আগে ওই নারীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেন শাহাদত। শাহাদত বিবাহিত; এ ছাড়া তার সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতারণার খবর পেয়ে সে সময় বিয়ে নাকচ করেন ওই তরুণীল বাবা। বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে দিলেও শাহাদত ওই নারীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে আবার বিয়ের কথা চূড়ান্ত করতে তাকে শুক্রবার নন্দীগ্রামে ডাকেন শাহাদত।
ওসি জানান, শাহাদতের সঙ্গে ওই তরুণী প্রথমে কুন্দারহাট বাজারে যান। সেখানে চা খেয়ে সন্ধ্যার পর রিধইল গ্রামের দিকে রওনা দেন। কিন্তু ওই নারী যেতে না চাইলে তাকে জোর করে শাহাদত ধানের জমির আইল দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে শাহাদত ওই নারীকে উপজেলার রিধইল গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পথে কলেজপাড়ার মনির হোসেন, বিজয় ও রাকিবুল ইসলাম তাদের পথরোধ করে। এই যুবকেরা হযরত আলী ও সুমন আলীর হয়ে কাজ করেন। পরে তারা দুই গ্রুপ হয়ে তরুণীকে সেখানে ‘ধর্ষণ’ করেন।’’
রাতে ওই তরুণী থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে রাতেই শাহাদতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার সকালে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি আনোয়ার দাবি করেন, হযরত ও সুমনের গ্রুপটির সম্পর্কে আগে থেকে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় মানুষদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করতেন। সুদের ওপর টাকা দিয়ে মানুষকে জুলুম করার খবর রয়েছে পুলিশের কাছে।
তিনি বলেন, ‘ওই নারী প্রথম দিকে খুব ভয় পেয়েছিলেন। ঠিক করে কিছু বলতে পারছিলেন না। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর বিস্তারিত জানান। মেয়েটির পরিবার খুব গরীব।’
অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।