‘নব আনন্দে জাগো’ এই প্রত্যয় নিয়ে এবার অনুষ্ঠিত হবে রমনার বটমূলে ছায়ানটের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয়ে চলবে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি সন্জীদা খাতুন।
‘নব আনন্দে জাগো’ এই শিরোনামের ব্যাখা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এতো বড় একটা দুরাবস্থা (মহামারি) গেল সারা বিশ্বে। এরপরেই নতুন করে জাগ্রত হওয়ার আহবান। এই আহ্বানটাই প্রধান থাকবে, আর এ নিয়ে সবাইকে জানানোর জন্যে একটি লেখা বক্তব্য আমি তৈরি করব। সেটা এখনও আমি তৈরি কর উঠতে পারিনি। তবে সেখানে এই আনন্দের কথায় থাকবে, এই আনন্দ, এই নব জাগরণ এটাই থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা বলেন, ‘মানবসমাজ আজ বৈশ্বিক মহামারি কোভিডের ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে আলোর পথের অভিযাত্রী। সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে ক্রমান্বয়ে পরিত্রাণ ঘটছে।
‘এরই সমুজ্জ্বল প্রতিফলন এবারের অমর একুশের গ্রন্থমেলার সফল আয়োজন। আগের স্বস্তিতে ফিরবার প্রবল আকাঙ্ক্ষা পদে পদে জয়ী করে তুলছে মানুষকে। পাশাপাশি মানুষ অভ্যস্ত হয়ে উঠছে নতুন স্বাভাবিক পরিবেশে।’
তিনি বলেন, ‘আগ্রাসী করোনাকে দমাতে প্রায় দুই বছর আমরা গৃহবন্দি ছিলাম। এক বাস্তবিক মানবিক-সামাজিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়কাল। সব শেকল ভেঙে বিশ্বজুড়েই আজ নব আনন্দে জেগে উঠবার আহ্বান। এর ভেতর আমাদের মূল প্রেরণা হয়ে উঠেছে বাঙালির প্রাণের বইমেলা আয়োজনে সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। অনুপ্রাণিত ছায়ানট নবোদামে রমনার বটমূলে বাংলার নববর্ষকে আবাহন জানানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে।’
লাইসা আহমেদ লিসা বলেন, ‘করোনার সময়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এবং রাষ্ট্রীয় বিধান মান্য করে ছায়ানট দুই বছর বর্ষবরণের অনুষ্ঠান স্বল্প পরিসরে অনলাইনে আয়োজন করেছে। এমন কি মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সাজানোর সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হই। শ্রদ্ধা জানিয়েছি কেবল অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণভাবে ছায়ানটের বর্ষবরণের মঞ্চে কমবেশি সোয়াশো শিল্পী থাকেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় রেখে এবারে আমরা শিল্পীসংখ্যা কমিয়ে এনেছি। মাসাধিককাল ধরে চলছে দলীয় পরিবেশনার মহড়া। ছায়ানট এর মধ্যেই প্রথামাফিক বটমূলের বরাদ্দ চেয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে। বরাবরের মতো সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মহলের আন্তরিক সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যশা করছি।’
রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে সবাইকে নিয়ে নব আনন্দে জেগে ওঠার এবারের আয়োজনে ছায়ানট সর্বান্তকরণে নতুনত্ব যোগ করতে প্রয়াসী বলেও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী, সহসভাপতি আতিউর রহমান ও সহসভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল।