ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামানকে ঢাকা আর্মড পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে। আদেশে তাকে ৯ এপ্রিলের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগরকান্দা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আজই তার বদলি আদেশ এসেছে। তিনি প্রায় চার মাস আগে বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। এটা নিয়মিত বদলি আদেশ। ৯ তারিখের মধ্যে এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ঢাকায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন হেড কোয়ার্টারে যোগদান করতে বলা হয়েছে।’
২৭ মার্চ আদালতে হওয়া ওসির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই আদেশে মামলার বিষয়ে কোনো কিছু লেখা নাই। তবে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী হেড কোয়ার্টার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে।’
ওসি মো. আশিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি প্রায় চার মাস আগে বদলির জন্য আবেদন করেছিলাম। এটা তারই আদেশ।’
চাঁদাবাজি মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই মামলার তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে বদলির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
ওসি মো. আশিকুজ্জামান ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল সালথা থানায় যোগ দেন। এর পরদিন ৫ এপ্রিল লকডাউনের মধ্যে সালথা এলাকায় জরিমানা আদায় নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়।
ওই ঘটনায় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে সালথা ইউএনও অফিস ও বাসভবন, সালথা থানা ও উপজেলা ভবনে তাণ্ডব চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এদিকে ২৭ মার্চ জেলার ৬ নং আমলী আদালতে ওসি আশিকুজ্জামানসহ এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেন সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুরাদ মোল্লা।
মামলায় তিনি সালথা থানার ওসি মো. আশিকুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নানের বিরুদ্ধে মারধর, চাঁদাবাজি ও হুমকির অভিযোগ তুলেছেন।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের আগে ওসি আশিকুজ্জামান তার কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেন। ওই সময় তিনি ওসিকে ৭৫ হাজার টাকা দেন। পরে আরও এক লাখ টাকা চাইলে তিনি সেটি দেননি।
বাদীর অভিযোগ, এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। ১৪ মার্চ মধ্যরাতে তার ভাই জিহাদকে ঘর থেকে তুলে থানায় নিয়ে যান ওসি। পরদিন তিনি থানায় গিয়ে এর কারণ জানতে চাইলে ওসি তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে বলেন। না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে জিহাদকে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন। তিনি টাকা না দিয়ে ফিরে যান।
মুরাদ আরও অভিযোগ করেন, ওসির নির্দেশে এসআই হান্নান তার ভাই জিহাদকে থানায় নির্যাতন করেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিন নিয়ে ২৩ মার্চ জিহাদ মুক্ত হলেও মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি চলাফেরাও করতে পারছিলেন না। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।