চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুই পক্ষের মারামারির অভিযোগ উঠেছে। তবে কেউ তেমন আহত হয়নি।
নগরীর সিআরবির রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা নিউজবাংলাকে জানান, মূলত উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে আলোচনা করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে এই সভা আয়োজন করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম সুমন এবং শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক উপসম্পাদক নেয়ামত উল্লাহ তপন সভায় ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সভা শুরুর কিছুক্ষণ পর বর্তমান কমিটিকে মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি করে সভাপতি তানভীর হাসান চৌধুরী তপু ও সেক্রেটারি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে একটি মিছিল আসে। মিছিলটি মূলত ছিল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী তালুকদার পারভেজ আনসারীর অনুসারীদের।
‘এ সময় তাদের সঙ্গে সভায় থাকা কিছু নেতাকর্মীর হাতাহাতি শুরু হয়, যা মারামারিতে গড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত সভার সমাপ্তি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থল ত্যাগ করেন।’
আনসারীর অনুসারী সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক শায়েস্তা খান বলেন, ‘আমি আজকের সভায় ছিলাম না। তবে সম্পূর্ণ ঘটনা শুনেছি। আজকে যেটা হয়েছে সেটা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারির বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কমিটি এক বছর মেয়াদি। অথচ দুই সদস্যের এই কমিটি দেয়া হয় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। মানে চার বছর অলরেডি শেষ।’
শায়েস্তা খান আরও বলেন, ‘তাহলে এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এতদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি কেন? হয়নি কারণ হলো ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি হওয়ার কথা ১২১ জনের। তপু আর রেজাউল কমিটিতে পদ দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন তিন শতাধিক নেতাকর্মীর কাছ থেকে।
‘এমনকি সীতাকুণ্ডে আমাকে পদ দেয়ার কথা বলে ২০২০ সালে রেজাউল আমার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছিল। পরে আরেকজনের কাছে বেশি টাকা পেয়ে তাকে পদ দিয়েছে। আমি এখনও তার কাছে ১ লাখ টাকা পাব। এক বছর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এটা নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছিল কিন্তু এখনও তারা প্রতিবেদন দেয়নি।’’
আনসারী বলেন, ‘আগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ না করে আমরা চাই ওটা ভেঙে নতুন কমিটি করা হোক। কারণ এরা পুরোপুরি ব্যর্থ। কমিটি গঠনের চার বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারল না। একে আমরা ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
তবে সভায় মারামারির ঘটনা ঘটেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘আসলে এটা বড় কিছু হয়নি। আমরা মিছিল নিয়ে ঢোকার পর ছেলেরা আগে পিছে বসা নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আর কিছু না।’
মারামারির বিষয়ে একই কথা বলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল। তিনি বলেন, ‘আসলে সভায় মারামারির ঘটনা ঘটেনি। রুমটা ছোট হওয়ায় বসা নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। আর কিছু না।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে করোনার কারণে আমাদের একটা সমস্যা হয়েছে। কিছু কারণে আমাদের নাম সংগ্রহ করতে দেরি হয়ে গেছে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম জমা দিতে পারিনি। কয়েক দিনের মধ্যেই কেন্দ্রে নাম জমা দেব। আর কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়া বা না হওয়া অথবা নতুন কমিটি দেয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিষয়।
‘টাকা নেয়ার বিষয়টা ভিত্তিহীন। এসবের কোনো প্রমাণ নেই। যার কথা বলছেন, সে তো আমার সামনে এসব বলেনি কখনও বা আমাকে ফোন করেও বলেনি। অভিযোগ তো অনেকেই করে কিন্তু সেটা প্রমাণিত হতে হবে।’