‘নারীর ক্ষমতায়নে শক্তি’ স্লোগানে পথচলার ৩০ বছর উদযাপন করেছে বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থা শক্তি ফাউন্ডেশন।
সংস্থাটি সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের নানামুখী প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র অর্থায়ন ও উদ্যোক্তায় পরিণত করে। এই ৩০ বছরে দেশে ৫ লাখের অধিক ঘরমুখী নারীকে এই পথে এনেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
দীর্ঘ পথচলা মোটেও সহজ ছিল না দাবি করে শক্তি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা জানান, নানা প্রতিবন্ধকতার মুখেই তাদের বিরামহীন কাজ করতে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত নারীকে ‘স্বাবলম্বী’ ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জীবনে পরিবর্তন আনার অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন তারা।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন পার্কে আয়োজিত দিনব্যাপী বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে সে সাফল্য গাঁথা তুলে ধরে আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নারীকে স্বাবলম্বী করে তোলার মানসিকতা নিয়ে শক্তি ফাউন্ডেশন কাজ শুরু করে ১৯৯২ সালে। শুরুটা ছিল রাজধানীকেন্দ্রিক। পরে সেটি সারা দেশে ছড়ায়।
আয়োজকরা দাবি করেন, এই যে সাফল্য তার নেপথ্যে কাজ করেছে সারা দেশে শক্তি ফাউন্ডেশনের সহজ শর্তে বিতরণ করা ক্ষুদ্র অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ এবং তার পাশাপাশি নারীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে মাঠপর্যায়ের বিরাট প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী।
বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানটি সাজানো হয় চারভাবে। জমকালো আয়োজনে সকালে প্রথমে উদ্বোধন পর্ব, পরে পুতুল নাট্যের মাধ্যমে দেখানো হয় শক্তি ফাউন্ডেশনের মাঠপর্যায়ে ক্ষুদ্র অর্থায়নের সুফল। দ্বিতীয়পর্বে রাখা হয় মধ্যাহ্নভোজ। তৃতীয় পর্বে সারা দেশে সফল স্বাবলম্বী ৩০ নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। শেষ পর্বে আয়োজন ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
অনুষ্ঠানে ছিলেন শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হুমায়রা ইসলাম।
অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, সাবেক প্রধান বিচারপতি তোফাজ্জল ইসলাম, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ, ইউসেপ চেয়ারম্যান পারভীন মাহমুদ, শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও চেয়ারম্যান মাহবুবা আক্তার মাহমুদ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির উপনির্বাহী পরিচালক (হেড অফ প্রোগ্রাম) ইমরান আহমেদ, জ্যেষ্ঠ পরিচালক (মানবসম্পদ) আসমা বেগম, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী পরিচালক (সোশ্যাল ওয়ার্কার ও রিসার্চার) ড. নিলুফার বানুসহ শক্তি ফাউন্ডেশনের তালিকাভুক্ত স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা ও কর্মী বাহিনী।
শক্তি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হুমায়রা ইসলাম বলেন, ‘ধীরে ধীরে শক্তি ফাউন্ডেশন সত্যিকার অর্থেই নারীর শক্তিতে পরিণত হয়ে উঠেছে। আমাদের দেয়া ক্ষুদ্র ঋণ অর্থায়ন বা প্রমাণ করেছে তার কার্যকর ব্যবহার হলে মানুষের জীবন বদলাতে পারে। তাই নারীর শক্তিকে জাগ্রত করে নারীর জীবনে পরিবর্তন আনার এই অব্যাহত প্রচেষ্টা যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রাখবে শক্তি ফাউন্ডেশন।’