বিএনপির নেতা কে- এমন প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে থাকার অধিকার হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, বিএনপির নেতা খালেদা জিয়াই, আর তিনি অসুস্থ বলে তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে স্বরচিত কবিতা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আগের দিন এক আয়োজনে বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘বিএনপি নানাভাবে বিভক্ত, বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে, আমরা জানতে চাই।’
জবাবে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যকে ‘উদ্ভট’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘এতদিনেও যদি জেনে না থাকেন যে বিএনপির নেতা কে, আর আন্দোলনের নেতা কে, তাদের সরকারি দলে থাকার অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘নতুন কোনো কথা নয়। বিএনপির নেতা দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং তার অসুস্থতার কারণে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’
২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ার দিন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়া হলে বিএনপি নেতৃত্বে আনে তারেক রহমানকে।
২০২০ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে বিএনপি নেত্রীর দণ্ড স্থগিত হলে তিনি বাড়ি ফেরেন। দুই বছর ধরে তিনি বাসাতেই থাকছেন। তবে রাজনীতি নিয়ে টুঁ শব্দটিও করছেন না।
খালেদা জিয়া মুক্ত- এই অবস্থাতেও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়েই চলছে। দুর্নীতির একাধিক মামলায় দণ্ডিত তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকেই দলের বিষয়ে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন।
কাদেরকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনি তো এই কথাগুলো বলেন শুধুমাত্র বিভ্রান্ত করার জন্য। আমরা খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিএনপি দ্বিধাবিভক্ত নয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
‘বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবে।’
সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা পুরোপুরিভাবে একটি ভ্রান্ত, ভুল ইতিহাস আমাদের আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে।’
ফখরুল বলেন, ‘একটি সময় আমরা অতিক্রম করছি যে সময়টি জাতির জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ। আমাদের ভাষা আন্দোলন, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এসব কিছুর যে অর্জন গণতন্ত্রের যে ব্যবস্থায় নিয়ে আসা। এসব কিছু তারা ভুলিয়ে দিয়ে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে। আমাদের যে সৃজনশীলতা, তা সবকিছু তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
‘প্রতিদিন যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। কোনো রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। বাচ্চারা পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’
কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সদস্য সচিব আব্দুস সালাম প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।