বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাসপাতালে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:৫১

‘এই যে দেখছেন, হাসপাতালের সামনে ড্রেন, এখান থেকেই তো মশার উৎপত্তি। গতকাল আমি হাফ হাতা শার্ট পরে এসেছিলাম। আমার মনে হয় সারা দিন কয়েক হাজার মশা আমাকে কামড়েছে।’

প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি, বাসার ছাদ এমনকি গণপরিবহন পর্যন্ত সব জায়গায় মশার উৎপাত চট্টগ্রামে। মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। একই অবস্থা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও।

অতিরিক্ত মশার উৎপাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরাও নতুন করে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।

চমেক হাসপাতালে প্রবাসী ছোট ভাইয়ের অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে বোয়ালখালীর আহলা দরবার শরিফ থেকে এসেছেন রায়হান ইকবাল। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডের বাইরে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে ৪০ মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে আছি, আমাকে অন্তত ৪০টি মশা কামড় দিয়েছে। এখানে তো আলো আছে, তুলনামূলক মশা কম। যেসব জায়গায় কিছুটা অন্ধকার, সেসব জায়গায় হাজার হাজার মশা। দেখে মনে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন মশাগুলো লালন-পালন করছে।’

একই অভিযোগ নগরীর নতুনপাড়া থেকে ছোট বোনকে নিয়ে হাসপাতালে আসা রেদোয়ান মাহমুদের। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই যে দেখছেন, হাসপাতালের সামনে ড্রেন, এখান থেকেই তো মশার উৎপত্তি। গতকাল আমি হাফ হাতা শার্ট পরে এসেছিলাম। আমার মনে হয় সারা দিন কয়েক হাজার মশা আমাকে কামড়েছে। কতক্ষণ সহ্য করা যায়! কামড় খাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’

হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের বাইরে থাকা ইকবাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবাকে নিয়ে এসেছিলাম, ওনার মাথায় সমস্যা। এসে দেখি এত ওপরেও মশা। আমাদের তো বাইরে থাকতে হয়, কিন্তু বাইরে এত মশা, এক মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকার উপায় নেই। আর কয়েল দিয়েও এসব মশা যায় না। তা ছাড়া কয়েল কিনতে গেলে সেখানেও সমস্যা, ৫ টাকার কয়েল ১০ টাকা। আপনি কিছু বললে আপনার কাছে বিক্রিও করবে না ওরা।’

মশার অতিরিক্ত উৎপাতের কারণে বৃষ্টি হলেও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন তো মশা পুরো দেশেই একটা বার্নিং ইস্যু। মশার কারণে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়াসহ বেশ কিছু রোগ হয়। সেটা হাসপাতাল হোক আর বাসাবাড়ি, মশা তো মশাই, সব জায়গাতেই ভয়ংকর। সেটা হাসপাতালে হলে তো নিশ্চয় আরও ভয়ংকর।’

তিনি বলেন, ‘আমি তো শিশু ওয়ার্ডে আছি, এখন মশার যথেষ্ট উৎপাত থাকলেও মশাবাহিত রোগীর সংখ্যা খুব বেশি না। তবে বৃষ্টি হলেই পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে। ডেঙ্গুসহ সব ধরনের মশাবাহিত রোগ হু-হু করে বাড়তে পারে। আর মশার কারণে ব্যবহৃত কয়েলের ধোঁয়া এবং স্প্রে শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসবের কারণে তাদের শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় কেউ এসবের সংস্পর্শে এলে তাদের জন্য তো আরও বিপজ্জনক।’

মশার উৎপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘মশার সমস্যাটা আসলে শুধু হাসপাতালের না, এটা পুরো শহরের সমস্যা। আর মশা নিয়ে কাজ করে মূলত সিটি করপোরেশন। কিছু সীমাবদ্ধতা তো সব ক্ষেত্রেই আছে, তবে মশার বিষয়টা আমরাও দেখব।’

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকায় ডিটেইলস বলতে পারছি না। তবে মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে পুরো সিটি করপোরেশনেই আমাদের মশা নিধন কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করি দ্রুত এটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

এ বিভাগের আরো খবর