গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা বিলের সমালোচনা করে বিবৃতি দেয়ায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির সমালোচনা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি মনে করেন, এই বিবৃতি সংস্থাটির নিজের কর্মপরিধির বাইরে। আর নিজেদের পরিধির বাইরে গিয়ে বিবৃতি দেয়া সংস্থাটির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদীয় কমিটিতে অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে গণমাধ্যমকর্মী আইন পরিমার্জন-পরিবর্ধন হবে। এটা টিআইবির কোনো বিষয় না। এ সত্ত্বেও বিবৃতি দিয়ে তারা বিষয়টিকে রাজনৈতিক করার চেষ্টা করছে, যা এ প্রক্রিয়ায় সহায়ক তো নয়ই, বরং অন্তরায়।’
গত সোমবার ‘গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে তোলেন তথ্যমন্ত্রী। পরে বিলটি পরীক্ষা করার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুরক্ষা, সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি বলে মনে করছে টিআইবি।
আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জমানান বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের আইনি সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করার কথা প্রস্তাবিত বিলে উল্লেখ করা হলেও কার্যত তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।
টিআইবি বলছে, অসদাচরণের সংজ্ঞা না দিয়েই এই অপরাধে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিপজ্জনক বিধান রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মী কল্যাণ সমিতি নামে সাংবাদিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার বিষয়টি থাকলেও, এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান এই বিলে অনুপস্থিত।
এই প্রতিক্রিয়ার জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিক, গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য। এটা দুর্নীতির কোনো বিষয় নয়। আর আইনটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে গেছে, সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এটি পরিবর্ধন-পরিমার্জন করা হবে।তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আমার আলোচনাও হয়েছে। টিআইবি আগ বাড়িয়ে বিবৃতি দিয়ে বিষয়টিকে রাজনৈতিক করার চেষ্টা করছে -এর মধ্যে দূরভিসন্ধি আছে। নিজেদের কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে সব বিষয়ে কথা বলা টিআইবির একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে দেখা যাচ্ছে।
‘আওয়ামী লীগ ডাকাতের সরকারে পরিণত হয়েছে’ বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দেন, তা নিয়েও কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দল-মত নির্বিশেষে ন্যায্য প্রাপ্যতার ভিত্তিতেই এক কোটি পরিবারকে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে, যাতে পাঁচ কোটি মানুষ উপকারভোগী হবে।
‘এখানে আমাদের দলীয় কোনো নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, যারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বিভিন্ন দল থেকেই রয়েছেন, তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আসলে সব কিছুর মধ্যে রাজনীতির গন্ধ খোঁজাই বিএনপির সমস্যা।’
তিনি বলেন, ‘আসলে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড দেয়ায় মানুষে মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসায় ও জনগণ সাধুবাদ দেয়াতে বিএনপি নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তারা উদভ্রান্তের মতো কথা বলছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব ইদানীং যে ভাষায় কথা বলছেন তা সিনিয়র রাজনীতিকের ভাষা নয় এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। মির্জা ফখরুল সাহেব আওয়ামী লীগকে ডাকাত বলেছেন। আসলে তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন বিশ্বডাকাতে পরিণত হয়েছিলেন এবং সেজন্য তাদের হাতে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।’