বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীকে মেসেজ পাঠিয়ে ঘর পাওয়া বাবুর লক্ষ্য সরকারি চাকরি

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:০৭

অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস দিয়ে ২ শতাংশ জমিসহ আধা-পাকা ঘর চেয়েছিলেন ভূমিহীন বাবা। তার সেই মেসেজের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে ঘর পেয়ে যান শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী যুবক।

মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা পুরাতন বাজারের বাসিন্দা বাবু মিয়া। শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী বাবুর বাবা নিহত হন সড়ক দুর্ঘটনায়। শেষে আশ্রয় হয় নানার বাড়িতে।

নানার বাড়িতে অভাব-অনটনে কেটে যাচ্ছিল বাবুর জীবন। তার নানিও সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন। জীবিকার তাগিদে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তার মা হাসনাহেনা বেগম। তার পাঠানো টাকায় চলেন বাবু।

সেই অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস দিয়ে ২ শতাংশ জমিসহ আধা-পাকা ঘর চেয়েছিলেন ভূমিহীন বাবু। তার সেই মেসেজের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে ঘর পেয়ে যান এ যুবক।

বাবু এখন মাগুরা আদর্শ কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার লক্ষ্য সরকারি চাকরি। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নিজ ঘরে বাবু মিয়া তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান নিউজবাংলাকে।

তিনি বলেন, ‘আমার একটা সরকারি চাকরি হলে হয়েই যায়। আর কোনো কিছু না। ‘যেহেতু ঘর পাইছি... মানে একটা ছোট সরকারি চাকরি পেলে জীবনডা একটু ভালো হতো।’

উপহারের ঘর পেয়ে খুশির মাত্রা বোঝাতে গিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বাবু মিয়া বলেন, ‘বিশাল খুশি৷ প্রধানমন্ত্রীর জন্য ধন্যবাদ ছোট হয়ে যাবে। আমি তো আজীবন তার জন্য হাত তুলে দোয়া করব। এখনও করব; ভবিষ্যতেও করব।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাপ মারা গেছে। বাবার কোনো জায়গা নেই। তারপর নানি বাড়ি চলে গেছি। এতিমের মতন মানুষ হইছি। ওইখানে থাকতাম।

‘দুই বেলা খাতাম, এক বেলা খেতে পারতাম না। এরমভাবে মানুষ হইছি। লাস্টে নানিও গাড়ি এক্সিডেন্টে দুনিয়া থেইকা চলে গেছে।’

নানি মায়ের মতো ছিলেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস দিলাম একটি বাড়ি দেন। আমারে একটা চাকরি দেন। মানে দুইটা জিনিস—একটা বাড়ি, একটা চাকরি।

প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস দেয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রতিবন্ধী বাবু মিয়া বলেন, ‘ফেসবুকে যে নাম্বার পেয়েছি, সেই নাম্বারে এসএমএস দিয়েছি।’

বাবু মিয়ার প্রসঙ্গে মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, ‘সে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী একটা বালক। তার একটি ছোট ভাই আছে। ঝিনাইদহ থাকা অবস্থায় তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়।

‘তার মা দুই ছেলেকে নিয়ে মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নে তার নানার বাড়িতে চলে আসে। তারা অভাব-অনটনে থাকে। অভাব দেখতে পেয়ে তার মা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করে। তার ছোট ভাই নারিন্দাতে একটি গ্যারেজে কাজ করে।’

আশরাফুল আরও বলেন, ‘সে পড়াশোনায় ভালো। নানির রান্না করা খাবার খেত। নানার সঙ্গে সময় কাটাত। হঠাৎ করে তার নানি মারা যাওয়ার পর সে প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পড়ে। সে তার অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস দেয়।

‘পরে আমরা তাকে তার নানার বাড়িতে ঘর তুলে দিতে চাইলেও সে সেখানে থাকতে চায় না। পরে সে নানার বাড়ির আশপাশে সে থাকতে চায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে তাকে আমরা ঘরটা করে দিই।’

ঘর পেয়ে বাবু মিয়া নতুন স্বপ্ন দেখছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলন, ‘জায়গা পেয়ে, ঘর পেয়ে স্ব সাহস পেয়েছে। সে ভাবে একটা বড় চাকরি করবে। তার আগের যে দুঃখ ছিল এই ঘরের মাধ্যমে তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে।

বাবু মিয়া ভালো চাকরি পাবে বলেও প্রত্যাশা করেন জেলা প্রশাসক।

বাবু মিয়া অত্যন্ত সৎ বালক উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তার যা প্রয়োজন তাই নেয়। দুটো কম্বল দিলে একটা ফিরিয়ে দেয়। কারণ তার একটা প্রয়োজন। তাকে সবাই সহায়তা করে। তার মা গার্মেন্টস থেকে টাকা পাঠায়, এটা দিয়েই সে চলে।

‘শুধু বাবু মিয়া নয়। সারা দেশে বাবু মিয়াদের মতো অসংখ্য গৃহহীনের ঘর বিো মূল্যে বানিয়ে দিচ্ছে সরকার।’

১৯৯৭ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত পুনর্বাসিত পরিবারের সংখ্যা ৭ লাখ ৮ হাজার তিনটি পরিবার৷ পরিবারের সদস্য পাঁচজন ধরে হিসাব করলে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ১৫ জন।

চলতি অর্থবছরে বরাদ্দকৃত একক গৃহের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩টি। বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর