বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঘাটে আটকে জামাল মিয়াদের জীবন

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২২ ১২:২২

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান জানান, এ রুটে আগের চেয়ে বাস, ট্রাক ও ছোট গাড়ির চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। নাব্যসংকট মাঝনদীতে নেই, তবে ঘাট এলাকায় রয়েছে। পানির স্তর নিচু হয়ে যাওয়ায় র‍্যাম উঁচু হয়ে গেছে। এতে ফেরিতে লোড-আনলোড করতেও দেরি হচ্ছে। এসব কারণে সড়কেও যানজট বাড়ছে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি কমছে না।

প্রায় এক মাস ধরে ঘাট এলাকায় রোজই যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।

নাব্য সংকটে ড্রেজিং ও ফেরির সংখ্যা বাড়িয়েও লাভ হচ্ছে না। ঘাট এলাকায় আটকে থাকছে শত শত যানবাহন।

১০ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর উঠতে হচ্ছে ফেরিতে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন চালক ও যাত্রীরা।

শুক্রবার সকালে ঘাট এলাকায় গিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক ও বাসের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। প্রতিটি বাস ফেরিতে উঠতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।

যানজটের কারণ হিসেবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) বলছে, পদ্মায় পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় নৌ চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। নাব্য সংকট নিরসনে ড্রেজিং করে বালু অপসারণ করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেরিগুলোকে অনেকটা পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে, যাতে সময় বেশি লাগছে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি আরও বলছে, পানির স্তর কমে যাওয়ায় পন্টুন নিচু হয়ে গেছে। ফলে ঘাট থেকে সড়ক উঁচু হওয়ায় ফেরিতে গাড়ি ওঠানামায়ও সময় বেশি লাগছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ। এসব কারণে বেশ কিছুদিন ধরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানজট লেগে থাকছে।

যানজটে নদী পার হতে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা।যশোর থেকে আসা ট্রাকচালক জামাল মিয়া বলেন, ‘এভাবে মানুষের জীবন চলে না। নিয়ম-শৃঙ্খলার অভাবে জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে।

‘সারা দিন ভাতের মুখ দেখি না। দুই দিন আগে গোসল করেছি। এভাবেই চলছে সব; দেখার কেউ নেই।’সাতক্ষীরা থেকে কবুতরের বাচ্চা নিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন ব্যবসায়ী সামাদ শেখ। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা থেকে গাড়িতে উঠেছি। এখনও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পার হতে পারলাম না।

‘১২ ঘণ্টার বেশি সময় রাস্তায় রয়েছি। আল্লাহ জানে কবুতরের বাচ্চাগুলো বাঁচবে কি না।’নাটোর থেকে আসা যাত্রী খালেক চৌধুরী বলেন, ‘১৮ থেকে ২০টি ফেরি চলাচল করলে ঘাটে জ্যাম থাকে না। এটি কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা।’

সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় রওনা হন আসাদুজ্জামান। আজ সকাল ৯টার দিকে তিনি দৌলতদিয়া ঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে যানজটে বসে ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘গাড়ির মধ্যেই ১২ ঘণ্টার বেশি কাটিয়ে দিলাম। এখনও নদী পার হতে পারলাম না।

‘ঢাকায় পৌঁছাতে কয়টা বাজবে জানি না। এত সময় গাড়ির মধ্যে থাকায় আমার বাচ্চা কান্নাকাটি করছে।’ওই সময় আরও কয়েকজন যাত্রী ও বাসচালক জানান, প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। ২৫ মিনিটের পদ্মা পাড়ি দিতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

তাদের ভাষ্য, সময়মতো গোসল ও খাওয়া-দাওয়া করতে না পারায় এরই মধ্যে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এমন বাস্তবতায় ভোগান্তি কমাতে দ্রুত উদ্যোগ দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, আগের চেয়ে বাস, ট্রাক ও ছোটগাড়ির চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। নাব্য সংকট মাঝনদীতে নেই, তবে ঘাট এলাকায় রয়েছে। পানির স্তর নিচু হয়ে যাওয়ায় র‌্যাম উঁচু হয়ে গেছে। এতে ফেরিতে লোড-আনলোড করতেও দেরি হচ্ছে। এসব কারণে সড়কেও যানজট বাড়ছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, যানজট দ্রুত সময়ের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৯টি ফেরি চলাচল করছে বলেও জানান বিআইডব্লিউটিসির এ কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর