বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় ১০০ ডলারে নামল তেলের দর

  •    
  • ৩১ মার্চ, ২০২২ ২২:২৩

বৃহস্পতিবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত পেট্রোলিয়াম ভান্ডার (রিজার্ভ) থেকে রেকর্ড ১৮ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর তাতেই বিশ্ব অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দরে বড় দরপতন হয়েছে। এক ধাক্কায় প্রতি ব্যারেলের দাম ৬ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ১০০ ডলারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলে অস্থির তেলের বাজারে আগুন নেভাতে বৃহস্পতিবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত পেট্রোলিয়াম ভান্ডার (রিজার্ভ) থেকে রেকর্ড ১৮ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর তাতেই বিশ্ব অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেল ৬ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ১০১ ডলার ৭৬ সেন্টে নেমে এসেছে। আর ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর প্রায় একই পরিমাণ কমে ১০৭ ডলার ৬৬ সেন্টে বিক্রি হচ্ছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল তেলের দাম; এক পর্যায়ে প্রতি ব্যারেল ১৩৯ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল। সপ্তাহখানেক ১০৮ থেকে ১২০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে। যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নতুন করে আলোচনায় বসার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার খবরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি প্রশমিত হয়। এ ছাড়া চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় লকডাউনের আশঙ্কায় তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে, এমন খবরে তেলের দরে পতন হয়।

১৫ মার্চ দুই ধরনের তেলের দামই ১০০ ডলারের নিচে নেমে আসে। কিন্তু কাজাখস্তানে প্রবল ঝড়ের কারণে বার্থ (জাহাজ ভেড়ানোর জায়গা) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাশিয়ার তেল রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আর তাতেই আবার বেড়ে যায় দাম। ২৩ মার্চ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেলের দাম ১১৫ ডলারে গিয়ে উঠে। ব্রেন্ট তেলের দর ১২২ ডলার ছাড়িয়ে যায়।

রয়টার্স বলছে, তেলের বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ। এই ভান্ডার থেকে তেল ছেড়ে তারা বাজারে তেলের দাম কমাতে পারে। সময়-সময় তারা সেটা করেও থাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্র সেই ভাণ্ডার থেকে ১৮ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়বে, এমন তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৯৭৪ সালের পর এবারই তারা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জ্বালানি তেল বাজারে ছাড়বে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বেলা দেড়টায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা না হলেও তেল ও গ্যাসের দাম কমানোর পদক্ষেপ নিয়ে তিনি ঘোষণা দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ওপেক ও রাশিয়া বৈঠকে বসবে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স। তবে তারা তেলের দাম কমাতে এখনই বাজারে খুব বেশি তেল ছাড়বে না বলেই জানা গেছে। আগের পরিকল্পনামাফিক তারা ধাপে ধাপে বাজারে তেল ছাড়বে।

২০২০ সালের কোভিড মহামারির শুরুতে সারা বিশ্বে যখন লকডাউন চলছিল, তখন জ্বালানির তেলের দাম মাইনাস ৩৭ ডলারে নেমে এসেছিল। অর্থাৎ এক ব্যারেল তেল কিনলে ক্রেতাকে উল্টো ৩৭ ডলার দেওয়া হয়েছে। এরপর ওপেক ও রাশিয়া ধারাবাহিকভাবে তেল সরবরাহ কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধি করে। গত বছরের অক্টোবর মাসে সারা পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করলে জ্বালানির চাহিদা বাড়তে শুরু করে। এর সঙ্গে দামও বাড়তে শুরু করে।

এর আগে গত বছরের ২৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র পেট্রোলিয়াম ভান্ডার থেকে পাঁচ কোটি ব্যারেল তেল ছাড়ে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধারায় কিছুটা ছেদ পড়ে। এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ ওপেক তেল সরবরাহ বৃদ্ধি করলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।

গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে দুই ধরনের তেলের দামই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশ সরকারও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করে।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে গড়ে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ছিল ৪২ ডলার। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৪৯ ডলার। এর পর থেকে গড়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ফেব্রুয়ারিতে ৫৩ ডলার, মার্চে ৬০, এপ্রিলে ৬৫, মে মাসে ৬৪, জুনে ৬৬, জুলাইয়ে ৭৩ এবং আগস্টে ৭৪ ডলার। অক্টোবরে এই দাম ৮৫ ডলারে ওঠে।

এ বিভাগের আরো খবর