পর্যটন জেলা কক্সবাজারে মেগা প্রকল্পসহ ৯৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে এ জেলা। কর্মসংস্থান হবে লাখো মানুষের। বদলাবে শহরের রূপ।
এই আমূল পরিবর্তনের অংশীদার কক্সবাজারের মানুষও ভাগ্যবদলের স্বপ্ন বুনছেন। বালি দিয়ে এসব প্রকল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন ও অর্জন তুলে ধরেছেন শিল্পীরা।
যেখানে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, সাবমেরিন (নবযাত্রা ও জয়যাত্রা), চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, জয় বাংলাসহ নানা বালির স্থাপনা; যা দেখছেন কক্সবাজারে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটক ও সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি উন্নত ও পরিপূর্ণ পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ করা হচ্ছে।
শুধু কক্সবাজার নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বৈশ্বিকভাবেও গুরুত্ব বাড়ছে বাংলাদেশের। এরই মধ্যে জাতিসংঘ গত ২৪ নভেম্বর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ অনুমোদন করে।
জাতিসংঘের এই স্বীকৃতি উদযাপনে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ২ জানুয়ারি রাজধানীতে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর সর্বপ্রথম কক্সবাজার জেলায় এই উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অনেকগুলো মেগা প্রকল্পসহ ৯৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। সেসব উন্নয়নের বার্তা তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই। এ জন্য সব শ্রেণির মানুষকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছি। এই আয়োজন কক্সবাজারবাসীর জন্য।সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আরও বলেন, ‘দিনব্যাপী এই উৎসবে ২০টি দোকান বসেছে। সেখানে চলমান প্রকল্পগুলোর উন্নয়নচিত্র তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি সৈকতে বালি দিয়ে মেগা প্রকল্পগুলোর ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, পর্যটকরাও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজিজ বলেন, ‘২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। এটা দেশের আত্মমর্যাদা বাড়াবে। এই সুসংবাদ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সর্বপ্রথম কক্সবাজারকে আমরা বেছে নিয়েছি। কারণ কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। পাশাপাশি সবার প্রচেষ্টায় দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারব।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘কক্সবাজারে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। করোনাকালেও সেগুলোর কাজে বাধা আসেনি। অর্থনৈতিক উন্নয়নে কক্সবাজার জেলা দেশে বিশেষ ভূমিকা রাখছে, আগামীতে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে। দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে উৎসব হচ্ছে এটা পরম সৌভাগ্য। জেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।’