বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পেঁয়াজে সয়লাব বাজার, দাম পাচ্ছেন না কৃষক

  •    
  • ৩১ মার্চ, ২০২২ ১০:০৪

সাঁথিয়ার বনগ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ প্রামাণিক বলেন, ‘সরকার কৃষকের প্রতি সদয় না হলে আমাদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। আশায় ছিলাম, রমজানের সময় পেঁয়াজের উত্তোলন মৌসুম হওয়ায় এবার ভালো দাম পাব। কিন্তু বাজারের যে পরিস্থিতি, তাতে লাভ তো দূরের কথা, আমাদের পথে বসার অবস্থা হবে। তাই অন্তত পেঁয়াজ উত্তোলনের সময়কাল তিন মাস বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ রাখলে কৃষকদের উপকার হতো।’

পাবনায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমি পেঁয়াজ। তবে উৎপাদন ভালো হলেও পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় মন ভালো নেই কৃষকদের। তারা বলছেন, বাজারে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তাতে ন্যায্যমূল্য দূরে থাক, উৎপাদন খরচই উঠছে না।

পাবনার সুজানগর, আতাইকুলা, বনগ্রাম হাট ঘুরে দেখা যায়, নিজেদের ক্ষেতের পেঁয়াজ হাটে বিক্রি করতে এনেছেন চাষিরা। হাটে নতুন পেঁয়াজের ছড়াছড়ি। পাইকার ব্যাপারীদের হাঁকডাকে সরগরম বাজার। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা। নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ নিয়ে বসে আছেন বিষণ্ণ মনে। দরদামের হাঁকাহাঁকিতেও নেই খুব একটা আগ্রহ।

কৃষকরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে মৌসুমি চারা পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করেছে। গুণগত মানে সবচেয়ে ভালো পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে মণপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না তাদের।

কৃষি বিভাগ বলছে, পেঁয়াজ তোলার মৌসুমে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কমে যায়। তাই কিছুদিন পর দাম বাড়তে পারে বলে আশাবাদী তারা।

চলতি মৌসুমে ছয় বিঘা জমিতে তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছেন সুজানগর উপজেলার চরদুলাই গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো ছিল। প্রতি বিঘায় গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ মণ পেঁয়াজের ফলন হয়েছে। সার, বীজ, তেলের দাম বাড়ায় প্রতি মণে কমপক্ষে ১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।’

এই খরচের বিপরীতে প্রতি মণ পেঁয়াজ কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারলে কৃষক লাভবান হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু সেখানে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এতে খরচই উঠছে না।’সাঁথিয়ার বনগ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ প্রামাণিক বলেন, ‘সরকার কৃষকের প্রতি সদয় না হলে আমাদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। আশায় ছিলাম, রমজানের সময় পেঁয়াজের উত্তোলন মৌসুম হওয়ায় এবার ভালো দাম পাব, কিন্তু বাজারের যে পরিস্থিতি, তাতে লাভ তো দূরের কথা, আমাদের পথে বসার অবস্থা হবে।’

তাই অন্তত পেঁয়াজ উত্তোলনের সময়কাল তিন মাস বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ রাখলে কৃষকদের উপকার হতো বলে মনে করেন তিনি।

কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক ইমরুল কায়েস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যখন কৃষকের হাতে পেঁয়াজ থাকে, তখন সরকার বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে। আর কৃষকের পেঁয়াজ ফুরিয়ে গেলে পেঁয়াজ আমদানিও বন্ধ করে দেয়। এতে মজুদদার সিন্ডিকেট লাভবান হলেও, কৃষক, ভোক্তা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

‘এ বছর রমজানে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। ফলে বাজারে সংকট হবে না। কাজেই, কৃষক বাঁচাতে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা দরকার’ বলেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপপরিচালক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। মাঠের পরিস্থিতি বলছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উৎপাদন বেশি হবে।

বাজারে দাম কমের বিষয়ে বলেন, ‘উত্তোলন মৌসুমে বকেয়া পরিশোধের চাপ থাকায় পেঁয়াজ একসঙ্গে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন চাষিরা। এজন্য দাম কম পান।

‘আমরা জেলায় সরকারি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি। সংরক্ষণের সুযোগ থাকলে কৃষকের হাতে পেঁয়াজ থাকবে, ন্যায্যমূল্যও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে’ বলেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর