দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক পণ্য ব্যবহারের প্রবণতা কমাতে পারলে অনেকখানি ব্যয় সাশ্রয় হবে। বাজেটে কার্যকর করারোপের মাধ্যমে সব ধরনের তামাক পণ্যের খুচরা মূল্য উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো দরকার বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে উন্নয়ন সমন্বয়ের বাজেট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন।
২০২২-২৩ অর্থবছরে তামাক পণ্যে কর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
আরও বক্তব্য রাখেন ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য ড. অরূপ রতন চৌধুরী এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান।
আতিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে তামাক পণ্যে কর যে হারে বাড়ছে মাথাপিছু আয় তার চেয়ে বেশি গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব পণ্য মানুষের কাছে সহজলভ্য থেকে যাচ্ছে। তাই তামাক পণ্যের খুচরা মূল্য উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়াতে এসব পণ্যে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
‘প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেখানে শুল্ক কাঠামো এমনভাবে ঢেলে সাজানোর কথা বলা হয়েছে যাতে একদিকে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা হ্রাস পায় এবং অন্যদিকে তামাক পণ্য বিক্রয় থেকে আসা রাজস্বও বাড়ে। সে অনুসারে ২০২২-২৩ বাজেটকে সামনে রেখে তামাকবিরোধী অংশীজনেরা যে কর প্রস্তাবগুলো হাজির করেছেন সেগুলো বাস্তবায়িত হলে ১৩ লাখ নাগরিক সিগারেট ব্যবহার ছেড়ে দেবেন। একই সঙ্গে ৯ লাখ অকালমৃত্যু রোধ করা যাবে ও সিগারেট বিক্রি থেকে আসা রাজস্ব ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাড়বে।’
অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সব অংশীজনকে একসঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।’
সিটিএফকে-এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নীতি-নির্ধারকদের এটা মনে রাখতে হবে যে, রাজস্ব বৃদ্ধি বা হ্রাস নয়, তামাক পণ্যে করারোপের মূল লক্ষ্য হলো জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’