বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমসটেক সম্মেলনে ঐক্যে জোর প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ৩০ মার্চ, ২০২২ ১৫:০০

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমসটেক ফোরামের ২৫তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে সংস্থাটিকে আরও কার্যকর করার মধ্য দিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ১৪টি ক্ষেত্র সম্প্রসারণে আমি নেতাদের হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।’

কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ১৪টি ক্ষেত্র সম্প্রসারণে বিমসটেক ফোরামের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে বিমসটেক ফোরামের পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

ঢাকার গণভবন প্রান্ত থেকে বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিলেন সরকারপ্রধান।

এবার সম্মেলনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আয়োজক দেশ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিমসটেক ফোরামের ২৫তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে সংস্থাটিকে আরও কার্যকর করার মধ্য দিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ১৪টি ক্ষেত্র সম্প্রসারণে আমি নেতাদের হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।’

ওই সময় তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সরকারপ্রধান।

১. এ অঞ্চলের জনগণের দৃশ্যমান সুবিধা নিশ্চিত করতে বিমসটেক এফটিএ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, জ্বালানি কেন্দ্র, সাংস্কৃতিক কমিশনের মতো বিমসটেক কেন্দ্র, সংযোগ প্রকল্প, এনার্জি গ্রিড সংযোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

২. লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট ও নীতি নির্ধারণী যে বিষয় আলোচনায় রয়েছে, কিন্তু এখনও চূড়ান্ত হয়নি, সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়া।

৩. সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং নতুন নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে বিমসটেকের বাইরের প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব এবং যোগাযোগ বাড়ানো।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দেয়া কোভিড-১৯ মহামারির ক্ষত থেকে মাত্রই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে এই বিশ্ব, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব আবারও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এমন জটিল সন্ধিক্ষণে, এই যুদ্ধ বিশ্বকে একটি নতুন বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহের ওপর প্রভাব ফেলছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে বিশেষ করে আমাদের মতো দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা কঠিন হয়ে উঠতে শুরু করেছে।’

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিমসটেকের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয় দেশ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য পরিচালনায় ২০০৪ সালে সই হওয়া বিমসটেক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন ফ্রি ট্রেড এরিয়া (এফটিএ) বাস্তবায়নে আমি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশের নেতৃত্বে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্রেড ইন গুডস অ্যান্ড রুলস অফ অরিজিন’ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া সেক্টরাল ওয়ার্কিং গ্রুপ কিছুটা এগিয়ে নিয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে আমি ফোরামের নেতাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’

বহুমুখী পরিবহন সংযোগ বিমসটেক সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় সদস্য দেশগুলো প্রণীত বিমসটেক পরিবহন সংযোগ সংক্রান্ত মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করতে আমি আজ আনন্দ নিয়ে বিমসটেক নেতাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছি।

‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে এই মাস্টার প্ল্যান কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

জ্বালানি খাতে সহযোগিতাকে উন্নয়ন এবং বেঁচে থাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেন টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘উদ্ভাবন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য আমাদের নতুন ও সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।’

২০১৮ সালে বিমসটেক সদস্য দেশগুলো পাওয়ার গ্রিড সংযোগ সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছে৷

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চুক্তিটিকে কার্যকর করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা পাওয়ার গ্রিড সংযোগ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বিমসটেক মাস্টার প্ল্যানের উন্নয়নে এডিবির সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রোগ্রামকে গ্রহণ করতে পারি।’

বিমসটেক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাঠামোর মধ্যে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিমসটেক কনভেনশন অন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড কনভেকশনাল ক্রাইমসের (সিটিসিসি) অধীনে কাজ করছি এবং সকল কার্যক্রম এবং ইভেন্টে অংশ নিচ্ছি।’

বিমসটেক অবকাঠামো শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী তার পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সংস্থার কার্যকারিতা বাড়ানো ও প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সচিবালয় প্রাঙ্গণে একটি নতুন আধুনিক আইকনিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছি।’

কোভিড মহামারির মধ্যেও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও আমরা গত বছর ৬.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছি। গত সপ্তাহে আমরা শতভাগ জনসংখ্যাকে বিদ্যুতের আওতায় এনেছি। জাতিসংঘ আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।’

গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে গত এক দশকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে বলেও আঞ্চলিক নেতাদের অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১.৫% থেকে ২০.৫% এবং চরম দারিদ্র্য ২৫.১% থেকে ১০.৫%-এ নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় তিন গুণ বেড়ে ২ হাজার ৫৯১ ডলার।’

শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমার পাশাপাশি গড় আয়ু ৭৩ বছর হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর