বছর দুয়েক আগে যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে বিমা কোম্পানির শেয়ারদরে হুলুস্থুল হয়েছিল, সেই বিষয়টি আবার সামনে এল। তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদেরকে পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ ধারণে আবার চিঠি দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ আইডিআরএ। একই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার আইডিআরএ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত চিঠি ৩০ নন-লাইফ বিমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়।
চিঠিতে এক যুগ আগে করা বিমা আইন ২০১০ এর ২১ ধারা এবং তফসিল (১)(খ) এর বিধান স্মরণ করিয়ে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ওই বিধানে বলা হয়েছিল, নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৪০ কোটি টাকা। এর ৬০ শতাংশ হবে উদ্যোক্তাদের এবং বাকি ৪০ শতাংশ হবে জনসাধারণের। এ হিসাবে ৪০ কোটির ৬০ শতাংশ বা ২৪ কোটি টাকার মালিকানা হবে উদ্যোক্তাদের।
২০২০ সালের মে থেকে বিমা কোম্পানির শেয়ার দরে অস্বাভাবিক উত্থানের পেছনে এমন নির্দেশ কাজ করেছিল। এক দশকেও এই আইন বাস্তবায়ন না হলেও আইডিআরএ সংক্ষিপ্ত সময় বেঁধে দেয়।
সে সময় এক বছরের মধ্যে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর দ্বিগুণ থেকে আট গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। কিন্তু পরে দেখা যায়, শেয়ারদর বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে উদ্যোক্তা-পরিচালকরা অর্থ কামিয়েছেন। বেশ কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা উচ্চ মূল্যে শেয়ার উল্টো বিক্রি করেছেন। কেউ কেউ তাদের হাতে থাকা সব শেয়ারই বিক্রি করে দিয়েছেন। কেবল একটি কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা শেয়ার কিনে কোম্পানিতে তাদের মালিকানা ৬০ শতাংশ পূর্ণ করেছেন।
সে সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সমালোচনার মুখে একটি কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি পরে কী করেছে, তাও জানানো হয়নি।
গত বছরের জুন থেকে বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারগুলো দর হারাতে থাকে। এর মধ্যে কোনো কোনো কোম্পানি ৫০ শতাংশ, কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ার ৬০ শতাংশ দর হারিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আবার সেই পুরনো নির্দেশ নতুন করে দেয়া হলো।
দুই বছর আগে একবার এক মাসের সময় বেঁধে নির্দেশনা জারি করা হলেও এবার কোনো সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। কেবল অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বিমা আইন ২০১০ প্রণয়ের আগে ও পরে নিবন্ধন পাওয়া সব কোম্পানিকেই এই নির্দেশনা পালন করতে হবে।