নেত্রকোণা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এক শিশুশ্রমিকের আঘাতে অপর এক শিশুশ্রমিক নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১৪ বছরের ওই শিশুকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শহরের বড়বাজার এলাকায় সালতি রেস্তোরাঁয় এ ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোহেল রানা নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত শিশুর নাম ইসমাইল হোসেন। সে সদর উপজেলার ছোটগাড়া এলাকার আবদুল বারেক ও কণা আক্তারের ছেলে। আর আটক ছেলেটির বাড়ি পঞ্চাননপুর গ্রামে।
রেস্তোরাঁটির অন্য শ্রমিকদের বরাতে পরিদর্শক সোহেল রানা জানান, ইসমাইল হোসেন ও তার মা কণা আক্তার সালতি নামের অভিজাত ওই রেস্তোরাঁয় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কণা কাজ শেষে বাড়ি চলে যান। ছেলে ইসমাইলের কাজের সময় শেষ না হওয়ায় হোটেলে থেকে যায়। রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই হোটেলের এক শিশুকর্মচারী ইসমাইল ধাক্কা দিয়ে সরতে বলেন। পরে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ইসমাইল বেধড়ক মারধরের শিকার হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ পরিদর্শন করে অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করে। পরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মা কণা আক্তার হাসপাতালে ছেলের মরদেহ নিয়ে কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘অভাবের লাইগ্গা আমি আমার ছোট্ট ছেলেডারে লইয়া হোটেলে কাম করি। আমি যাওনের সময় পুতেরে ভালা রাইক্খা আইসলাম। কিন্তু অহন কি হায় আল্লা, সর্বনাশ হইল! আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
রেস্তোরাঁর মালিক পক্ষের একজন রাজু সাহা জানান, ‘দুই কর্মচারীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় ইসমাইল হঠাৎ করে নিচে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
হোটেলে শিশু শ্রমিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, ‘রেস্তোরাঁর সিসিটিভি ক্যামেরা কেন বন্ধ করে রাখা হয়েছে, বিষয়টি রহস্যজনক। এর পেছনে কোনো কারণ আছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে। নিহত শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এ ছাড়া একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।’