বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর জন্য ১৫২ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকা নতুন মানবিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের প্রথম সফর শেষে মঙ্গলবার এমন ঘোষণা আসে।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত আমরা ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা) দিয়েছি। নতুন দেয়া তহবিলের মধ্যে ১২৫ মিলিয়ন ডলার (১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা) রোহিঙ্গা শরণার্থী ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্য নেয়া কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রদূত হাস ২৭ মার্চ কক্সবাজার যান। মঙ্গলবার পর্যন্ত কক্সবাজারে অবস্থান করেন তিনি।
সফরকালে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচিগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা, শিবিরগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ, পরিবেশের সুরক্ষা, জলবায়ুর দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিঘাত সহনশীলতা তৈরি এবং নিরাপদ খাদ্য বিতরণে সহায়তা কীভাবে করছে তা সরেজমিনে দেখেন।
ইউএসএআইডি ৪৫০টি মোবাইল অগ্নিনির্বাপণ ইউনিট এবং ২০ লিটার পানি ধারণক্ষমতার তিন হাজার ব্যাকপ্যাক/ যন্ত্র রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর জন্য তৈরি ও সরবরাহ করেছে এবং ভবিষ্যতে তিন হাজার শরণার্থী স্বেচ্ছাসেবীকে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এতে করে শিবিরগুলোতে আগুন প্রতিরোধে এবং অগ্নিনির্বাপণের কাজ সহজ হবে। এই প্রকল্প ২০২৩ সালের মধ্যে সব রোহিঙ্গা শিবিরে সম্প্রসারণ করা হবে।
শুধু ২০২১ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য প্রায় ৩০২ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সেনাচৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোয় অভিযান চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা। ফাইল ছবি
সেনাদের চালানো নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচাতে বাংলাদেশে আসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা।
এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগতসহ নানা ধরনের সংকটে পড়ে জনবহুল বাংলাদেশ।