বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ৫.১% ক্ষতি: বিশ্বব্যাংক

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২২ ২২:০৩

এই ঋণের সুদের হার হবে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ; সার্ভিস চার্জ শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ৩০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষতি হয়। অনিরাপদ সড়ক অবকাঠামো দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।

বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা তুলে ধরে এই তথ্য দিয়ে নিরাপদ সড়কের জন্য ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বর্তমান বিনিময়হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।

এই ঋণের সুদের হার হবে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর সার্ভিস চার্জ শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ৩০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে প্রথম ৫ বছর কোনো কিস্তি দিতে হবে না।

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রথম এ ধরনের প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বিশ্বব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়ক ও জেলা সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও আহতদের সংখ্যা কমাতে এই ঋণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ‘নিরাপদ সড়ক প্রকল্প’ নামের প্রকল্পে এই ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। এই প্রকল্প বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।

নিরাপদ সড়কের পাইলট প্রকল্প হিসেবে দুটি জাতীয় মহাসড়ক এন-৪ (গাজীপুর-এলেঙ্গা) এবং এন-৬ (নাটোর থেকে নবাবগঞ্জ) নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পে উন্নত প্রকৌশল নকশা, স্বাক্ষর এবং চিহ্নিতকরণ, পথচারীদের সুবিধা, সড়কের গতি, জরুরি সেবা ইত্যাদি বিষয়গুলো থাকবে। এই উদ্যোগগুলো সড়ক দুটিতে ৩০ শতাংশের বেশি সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সহায়তা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের প্রধান মার্সি টেম্বন বলেন, 'সড়ক দুর্ঘটনা স্থায়ীভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ার প্রধান কারণ এবং শিশু মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ। সড়ক দুর্ঘটনা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দরিদ্র পরিবারগুলোকে প্রভাবিত করে। বাংলাদেশে সড়কের নিরাপত্তা উন্নত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকার।'

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে এবং মানুষের জীবনের মর্মান্তিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য একটি ব্যাপক কর্মসূচি তৈরি করতে সহায়তা করবে।’

‘দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের প্রকল্পে প্রথম অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ। অনিরাপদ এবং কম বিনিয়োগ করা সড়ক অবকাঠামো দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। দুই চাকার গাড়িসহ যানবাহনের সংখ্যা তীব্র বৃদ্ধির সাথে, নিবন্ধিত যানবাহনের নিরাপত্তা পরিদর্শন অপর্যাপ্ত রয়ে গেছে।

প্রকল্পটি একটি দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় কর্মসূচি এবং একটি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার উন্নয়নে সহায়তা করবে; যা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তার উন্নতি সাধন করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।’

‘প্রকল্পের আওতায় আধুনিক সড়ক নিরাপত্তা প্রয়োগে সক্ষমতা জোরদার করতে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। চালকদের জন্য একটি ব্যাপক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও হাতে নেনয়া হবে।’

প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত কিছু শহর এলাকা এবং জেলা সড়কগুলোর নিরাপত্তায় পাইলট কর্মসূচি নেয়া হবে। একই সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ এবং হাইওয়ে টহলের সক্ষমতাও বাড়ানো হবে, যাতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং উচ্চগতির ঝুঁকিপূর্ণ চালকদের শনাক্ত করা যায়।

এ জন্য স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যেমন- সিসিটিভি, ইলেকট্রনিক মেসেজিং, টহল যান বৃদ্ধি এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী উদ্ধারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার সরঞ্জাম বাড়ানো হবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০১৬ সালে যারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। এ জন্য একটি টোল-ফ্রি নম্বরের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নেয়া হবে। একই সঙ্গে সড়ক মহাসড়কের পাশের নির্দিষ্ট জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে জরুরি চিকিৎসাসেবা বাড়ানো হবে, যাতে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমানো যায়। এ ছাড়া দুর্ঘটনা-পরবর্তী ট্রমা কাটিয়ে উঠতে আহতদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

যানবাহন ব্যবস্থায় বিদ্যমান অবকাঠামোগত সুবিধাগুলো বাড়ানো হবে। সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, দুর্ঘটনা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, আইসিটি সিস্টেম উন্নয়ন, যানবাহন নিবন্ধন আধুনিক করা, ড্রাইভার লাইসেন্সিং ও ফ্রি পরিষদ ব্যবস্থা আরও আধুনিক হবে। একই সঙ্গে সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের আচরণগত উন্নয়নেও এ প্রকল্প কাজে আসবে।

এ বিভাগের আরো খবর