দেশে গত ছয় বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে হিসাবে বছরে গড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর ৪০ ভাগ ক্ষতিই হয়েছে কৃষি খাতে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের ‘বাংলাদেশ ডিজাস্টার রিলেটেড স্ট্যাটিস্টিক (বিডিআরএস): ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ন্যাচারাল ডিজাস্টার প্রেসপেকটিভ’ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে বিবিএস।
আগারগাঁওস্থ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার এ জরিপের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ১১ ধরনের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের ৬৪ জেলার দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এতে দেখা যায়, ছয় বছরে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা ধরনের দুর্যোগের ক্ষতিতে পড়ে তিন কোটি ৪১ লাখ ১২ হাজারের মতো মানুষ। এর আগের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ২ কোটি ২০ লাখ ৪ হাজার জন।
জরিপে দেখা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত ২০১৫-২০২০ সালে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাতে ক্ষতি হয় ৭১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।
সব খাতের মধ্যে শস্য খাতে ২৮.৯০ শতাংশ, প্রাণিসম্পদে ৩.৯৮ শতাংশ, পোলট্রিতে ১.৫১ শতাংশ, মৎস্য খাতে ৩.৭১ শতাংশ, জমি (ভূমি) অবক্ষয়ে ক্ষতি হয় ৫২.৫৬ শতাংশ।
এ ছাড়া বসতঘর, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, অবকাঠামো প্রভৃতি ৭.৩৮ শতাংশ এবং খানাভিত্তিক সামাজিক বনসহ উঠানের গাছ-পালায় ১.৯৬ শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জরিপে আরও দেখা যায়, দুর্গতদের প্রায় ৩১ শতাংশ ছয় বছরে চারবার দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর তিন বারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে ১৫ শতাংশ পরিবার বা খানা।
দুর্যোগগুলোর মধ্যে বন্যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে বলে জরিপে বলা হয়েছে। ছয় বছরে বন্যায় আর্থিক ক্ষতি হয় ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকার।
নদী বা উপকূলীয় ভাঙনে ২৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা এবং ঘূর্ণিঝড়ে ২৫ হাজারর ৫৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।