দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পের মতো স্থানীয় সব শিল্পের কর্মপরিবেশও সমানভাবে নিরাপদ করার কথা জনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি।
মঙ্গলবার এফবিসিসিআই এবং আইএলও-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘উৎপাদনশীলতা উন্নতকরণে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রচার’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, দেশের সব শিল্পকারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই নির্দেশমতো দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টরা এখন একযোগে কাজ করছেন।
তিনি জানান, এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি ৫ হাজার ২০০টি কারখানা পরিদর্শন করেছে। একইভাবে বাকি কারখানাগুলোও পরিদর্শনের আওতায় আনা হবে। এভাবে তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী অন্যান্য শিল্পকে যেভাবে নিরাপদ করা হয়েছে, ঠিক একইভাবে অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশও নিরাপদ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শুরুর দিকে পোশাক খাতে সংস্কার কার্যক্রমে অনেক মালিকের অনীহা ছিল। এখন এই খাত শোভন কর্মপরিবেশের সুফল পাচ্ছে। একইভাবে দেশের ওষুধশিল্পও মানসম্পন্ন কারখানার কারণে বিশ্বজুড়ে সুনাম অর্জন করেছে।
কর্মশালায় সব খাতকে নিরাপদ করতে সরকারি নীতির সফল বাস্তবায়নের আহ্বান জানান আইএলও-এর কারিগরি উপদেষ্টা জর্জ ফলার। কর্মক্ষেত্র নিরাপদ হলে মালিক-শ্রমিক উভয়ের জন্যই তা লাভজনক হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. এহছানে এলাহি বলেন, ‘শিল্পকারখানার উন্নয়নে নিরাপত্তা, মান ও উৎপাদন একটি আরেকটির সাথে সংশ্লিষ্ট। কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নত হলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও মানেরও উন্নয়ন হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান সচিব।’
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ কাজের সুযোগ পাওয়া শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারগুলোর একটি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদশের শিল্প বাণিজ্য যেমন বাড়ছে, তেমনি সেখানে শ্রমিকদের সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। টেকসই উন্নয়নের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে শিল্পের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেফটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছে এফবিসিসিআই। জাতীয় ওএইচএস প্রোফাইল এবং জাতীয় ওএইচএস নীতির ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে এই কাউন্সিল।’
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মালিক, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই কাউন্সিলকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন, পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ, রেজাউল করিম রেজনু, এম জি আর নাসির মজুমদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, হারুন অর রশীদ, ড. ফেরদৌসী বেগম, আমজাদ হোসাইন, মো. শাহীন আহমেদ, শমী কায়সার, মো. নাসের, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, সিআইপি, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারী, মো. আবু হোসাইন ভুঁইয়া (রানু), মো. রেজাউল ইসলাম মিলন এবং মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।