বৈশ্বিক ও দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মেডিকেল জার্নাল প্রকাশনায় বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নমুখী বলে দাবি করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা আইপিডিআই ফাউন্ডেশন।
আইপিডিআই ফাউন্ডেশন রিসার্চ মেথডোলজি কোর্সের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে ‘মেডিকেল জার্নাল: বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মহসীন আহমদ এ দাবি করেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল শাফী মজুমদার ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল রির্সাচ কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
মহসীন আহমদ বলেন, ‘কোনো জার্নাল যখন সুনির্দিষ্ট রিভিউ প্রক্রিয়া অতিক্রম করার মাধ্যমে তার গুণগতমান বজায় রাখে তখন তাকে আমরা ইনডেক্সড জার্নাল বলে থাকি। আমাদের দেশে মেডিক্যাল জার্নালের সর্বমোট পরিমাণের তুলনায় ইনডেক্সড জার্নালের সংখ্যা একেবারেই কম। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে সর্বমোট ১৪৩টি মেডিক্যাল ও ১২টি ডেন্টাল জার্নাল রয়েছে। এই ১৫৫টি জার্নালের মধ্যে ইনডেক্সড জার্নাল আছে মাত্র ৪টি।
‘প্রতিবেশী দেশ ভারতে সর্বমোট মেডিকেল জার্নালের সংখ্যা ৫৭০টি। এর মধ্যে ইনডেক্সড মেডিক্যাল জার্নালের সংখ্যা ২০৩টি।
‘অন্যদিকে পাকিস্তানে মোট মেডিক্যাল জার্নালের সংখ্যা ৯৭টি, যারা মধ্যে ইনডেক্সড জার্নাল ৯টি। অবশ্য শ্রীলংকার চেয়ে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি। মোট ১৬০টি জার্নালের মধ্যে শ্রীলংকায় মাত্র ২টি ইনডেক্সড জার্নাল রয়েছে।’
আইপিডিআই মনে করে, একটি দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ও একাডেমিক অবস্থান সে দেশের প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক নিবন্ধের গুণগত মান এবং পরিমাণ দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। বিশ্বায়নের এই যুগে স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করা এবং তা থেকে উত্তরণের জন্য তথ্য ও জ্ঞানের আদান-প্রদান গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র গবেষণার মাধ্যমেই এ উদ্দেশ্য পরিপূর্ণভাবে সাধিত হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মেডিক্যাল জার্নালের মূল লক্ষ্য হল গঠনমূলক বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করে চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করা।
এ থেকে উত্তরণে নবীন গবেষকদের প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কর্মশালার আয়োজন করে আরও দক্ষ গবেষণাকর্মী তৈরি করতে চিকিৎসা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতো বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে নবীন গবেষকদের দক্ষতা বিকাশে তাদের পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় নীতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে তারা আন্তর্জাতিক মানের নিবন্ধ লেখায় দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন।
আয়োজকরা জানান, আইপিডিআই ফাউন্ডেশন দক্ষ গবেষক ও গবেষণাপত্র লেখক তৈরির উদ্দেশ্যে নিয়মিত রিসার্চ মেথডোলজি কোর্সের আয়োজন করে আসছে।
কোর্সে ফ্যাকাল্টি হিসেবে আছেন অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, অধ্যাপক হাসিনুর রহমান, ডা. মহসীন আহমদ, ডা. এ কে এম মনওয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।