আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ ও দাম নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও চলতি অর্থবছর দেশে চাল ও গমের ঘাটতির আশঙ্কা নেই বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, দেশে খাদ্যের যে চাহিদা, উৎপাদন তার চেয়ে বেশি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। সরকারি দলের সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী হিসাব করে দেখান, জনসংখ্যার হিসাবে যে চাহিদা, তার চেয়ে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেশি।
তিনি বলেন, দেশে ২০২০-২১ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের কোনো ঘাটতি ছিল না, ২০২১-২২ অর্থবছরেও ঘাটতি হওয়ার ‘কোনো আশঙ্কা নেই’।
তার দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয় ৪০৭ দশমিক ০৭ লাখ টন (৩৯৪ দশমিক ৮১ লাখ টন চাল এবং ১২ দশমিক ২৬ লাখ টন গম) খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস-২০১৬) অনুসারে মানুষের দৈনিক গড় খাদ্যশস্য গ্রহণের পরিমাণ ৩৮৭ গ্রাম (চাল ৩৬৭ দশমিক ২ গ্রাম এবং গম ১০ দশমিক ৮ গ্রাম)।
সে হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৯ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ধরলে (প্রাক্কলিত) মোট খাদ্যশস্যের প্রয়োজন ছিল ২৩৯ দশমিক ১৪ লাখ টন (চাল ২২৬ দশমিক ৯০ লাখ টন এবং গম ১২ দশমিক ২৪ লাখ টন), যা ২০২০-২১ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের মোট উৎপদানের তুলনায় কম।
আবার দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বিবেচনা করলে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১৭১ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন। সে হিসাবে দেশে খাদ্যশস্যের মোট চাহিদা হবে ২৪২ দশমিক ৩০ লাখ টন। সেটাও ২০২১-২২ অর্থবছরের খাদ্যশস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ মমতা হেনার প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহ এবং ২৮ এপ্রিল থেকে বোরো সংগ্রহের মৌসুম শুরু হবে।
বিএনপির মোশারফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন বোরো মৌসুমে সরকার সাড়ে ৬ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।