প্রাথমিক, মাধ্যমিকের (স্কুল-কলেজ) পর এবার মাদ্রাসা ও কারিগরি পর্যায়ে রমজান মাসে নিয়মিত ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব বেগম রুজিনা সুলতানার সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে এ বিভাগের আওতাধীন কারিগরি ও মাদ্রাসার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেয়ার অনুরোধ করা হলো।
এর আগে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব নজরুল ইসলামের সই করা অফিস আদেশে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালুর কথা জানানো হয়।
গত ২২ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ রমজান পর্যন্ত খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সে সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রোববার হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
আইনজীবী বলেন, ‘বাংলাদেশে ৯০ ভাগ নাগরিক মুসলমান। তাদের ধর্ম ইসলাম। প্রথা ও রীতি অনুয়ায়ী রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। রমজান মাসে শিক্ষকরা রোজা রেখে ক্লাসে লেখাপড়া শেখানোর বিষয়ে মনোযোগী হন না।’
এমনকি রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা সংবিধানের ২৬, ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও নোটিশে উল্লেখ করেন তিনি। রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শিক্ষা সচিবকে বিবাদী করা হয়।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। ২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর গত ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।