চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তার ভায়রা ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভৈরব নদ থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
ওই ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, এমন অভিযোগ সত্য নয়। আগামী নির্বাচনে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে প্রতিপক্ষরা এই অভিযোগ তুলেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন রাত হলেই জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ভৈরব নদ থেকে এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি কাটা শুরু হয়। ভোর ৪টা পর্যন্ত এই কাজ চলে। এরপর ১৪ থেকে ১৫টি ট্রাক্টরে করে মাটি পৌঁছে দেয়া হয় উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায়।
হাফিজুর রহমান বেল্টু নামের এক কৃষক জানান, ১১ মার্চ রাতে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে যাওয়ার জন্য তার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রশিদের দেড় বিঘা কৃষিজমি নষ্ট করে রাস্তা করা হয়। সে সময় বেল্টু তাদের বাঁধা দেন। তবে কোনো ফল না পেয়ে ১২ মার্চ সকালে জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
বেল্টু বলেন, “মা-বাবা ইটভাটায় মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আমাদের ফসলি জমির ক্ষতি করায় ট্রাক্টর ও ইটভাটা মালিক শাজাহান আলীকে ফোন করে মাটি কাটা বন্ধের জন্য অনুরোধ করি। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই। ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খাঁন ও তার ভায়রা ভাই ফজলুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। আমি তাদের কথামতো মাটি কেটেছি।’”
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘নদের মাটি কেটে বিক্রির সময় কৃষিজমি নষ্টের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
ইটভাটা মালিক শাজাহান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আমার ইটভাটার জন্য মাটি কিনি। তবে ওই মাটি কোথায় থেকে কে দিল সেটা আমার জানার বিষয় না। আমি কোনো অবৈধ কাজ করি না।’
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান সোহরাব বলেন, ‘মাটি বিক্রির বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে প্রতিপক্ষরা ওই কাজ করেছেন।
‘আমার ভায়রা ভাই ফজলুর রহমান কয়েকদিন আগে ভৈরব নদের পার থেকে নিজের জমির মাটি কেটেছিল। এখন ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেয়া হচ্ছে।’
তবে নদের মাটি কেটে বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন ফজলুর। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু এক দিন নদের মাটি কেটে বিক্রি করেছি। প্রতিদিন তো করি না।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে ভৈরব নদ থেকে মাটি কেটে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এ কাজ করে থাকেন তাহলে তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।