দেশে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে বলে জাতীয় সংসদে অভিযোগ করেছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা।
নিয়োগ বাণিজ্য, মানহীন শিক্ষা এবং কর্মবিমুখ শিক্ষাব্যবস্থার কারণে দিন দিন বেকারত্ব বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর বিল পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বিরোধী দলগুলোর কয়েকজন এমপি।
তারা হলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ এবং বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।
হারুনুর রশীদ বলেন, বর্তমানে শিক্ষার গুণগতমান একেবারে ভেঙে পড়েছে। তাছাড়া স্কুল-কলেজগুলোতে গত ১০ থেকে ১৫ বছরের অর্থ বিনিময়ের ছাড়া কোন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ হচ্ছে না। সম্প্রতি দপ্তরি নিয়োগেও ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়োগ-বাণিজ্য হয়েছে বলে দাবি করেন হারুন।
তিনি গতানুগতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা চালুর অনুরোধ করেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আজকের এ বিল নিয়ে আমরা ১৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস করলাম। কিন্তু বেকারত্বের হার বেড়েছে বৈ কমেনি।’
একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে এমএ পাস বেকারের সংখ্যা ৩৭ শতাংশ, বিএ পাস বেকার ৩৭ শতাংশ, এইচএসসি ২৭ শতাংশ, এসএসসি পাস করা বেকারের সংখ্যা ২৮ শতাংশ। সুতরাং ৬৬ শতাংশের ওপরে শিক্ষিত বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ নিজ উদ্যোগে কিছু কাজ করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। আজ সারা দেশে যত শিক্ষিত বেকার আছে তার ২১ শতাংশ মাত্র চাকরি পেয়েছে।’
ফখরুল ইমাম বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইচ্ছেমতো আর্থিক ব্যবস্থাপনা করছে। এটি বন্ধ করতে না পারলে দুর্নীতি বেড়ে যাবে, শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। তিনি বলেন, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নীতিমালা করা উচিত। দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ না হলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, শিক্ষা বাণিজ্য বেড়ে যাবে।’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদের স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগুলো খুবই সুন্দর। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থা কর্মবিমুখ। শিক্ষকরাও তেমনভাবে প্রশিক্ষিত নয়। স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সকল ছেলে মেয়েরা বের হচ্ছে তারা অধিকাংশই বেকার হয়ে ঘুরছে। তিনি কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানান।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নির্ণয়ে ইউজিসি দিয়ে একটি সমীক্ষা করা উচিত।’
স্কুল কলেজের গভর্নিং বোর্ডে এমপিদের সংযুক্তি নিয়ে কোর্টে যে মামলা চলমান সে বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য আইনজীবী নিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।