আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার সকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
কৃষিসচিব বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে থাকি। এখন পর্যন্ত কৃষক পেঁয়াজের ভাল দাম পাচ্ছে। অন্যদিকে, সামনে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম যাতে না বাড়ে, সেটিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।
‘তাই, আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরিকল্পনা কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেই। তবে আমরা নিবিড়ভাবে বাজার মনিটর করছি, কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের সংখ্যা ৭৭টি। মোট বরাদ্দ ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪০ শতাংশ, যা জাতীয় গড় অগ্রগতির চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। এ সময়ে জাতীয় গড় অগ্রগতি হয়েছে ৩৫ শতাংশ।
রমজান মাসকে সামনে রেখে বাড়ছে পেঁয়াজের চাহিদা। এমন পরিস্থিতিতে দেশে নিত্যপণ্যটির বাড়তি চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল রাখতে এর আমদানির সময়সীমা আরও এক মাস বাড়াতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি (ইমপোর্ট পারমিশন/আইপি) ইস্যু কার্যক্রমের সময়সীমা আগামীকাল ২৯ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত আছে।
আমদানির সময়সীমা বাড়ানো হলে বিদ্যমান সুযোগের আওতায় পেঁয়াজ আমদানিকারকরা আগামী ঈদুল ফিতর পর্যন্ত দেশে পেঁয়াজের আইপি ইস্যু কার্যক্রম চালাতে পারবেন। একই সঙ্গে এলসি খুলতে পারবেন। এতে রমজানে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা স্বাভাবিক ও দাম স্থিতিশীল থাকবে।
রোববার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালকের কাছে একটি আধা সরকারি পত্র পাঠানো হয়েছে।
এ সময় রাজশাহীতে সেচের পানি না পেয়ে ২ কৃষকের আত্মহত্যার বিষয়ে সরেজমিন তদন্তের জন্য চার সদস্যের ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করার কথা জানান কৃষিসচিব।
তিনি বলেন, ‘এ কমিটি ইতোমধ্যে রাজশাহীতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তকাজ শুরু করেছে। সেচের পানি সময়মতো না পাওয়ার কারণ উদঘাটন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা করতে বলা হয়েছে কমিটিকে।’
‘এ খবরটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ), জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেচের পানি সময়মতো না পাওয়ার কারণ ও কৃষকের বিষপান’ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা ও দোষীদের চিহ্নিত করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এ কমিটি ইতোমধ্যে তদন্তকাজ শুরু করেছে।’
সেচের পানি দেয়ার ক্ষেত্রে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে, তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সচিব বলেন, ‘আর পুলিশও তদন্ত করছে, তারা ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
সেচের পানি না পেয়ে দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় করা কমিটির প্রধান করা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলুকে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, বিএডিসির (নাটোর) নির্বাহী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং বিএমডিএ'র (নওগাঁ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সমশের আলী।