বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৮ লাখ টাকায় দুটি পিলার, সেতু কোথায়

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২২ ১০:১৭

সর্বরামপুর গ্রামের আব্দুল গফুর বলেন, ‘খালের ওপারের ৫ থেকে ৬টি গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সর্বরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। আবার খালের ওপারে অনেক কৃষিজমি আছে। কৃষিপণ্য এ পাশে আনতে সমস্যা হয়। কবে ব্রিজ হবে কিছুই জানি না। আর কিছুদিন পর ব্রিজ না হলে আমরা এই দুই পিলারই ভেঙে ফেলব।’

খালের মাঝে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দুটি পিলার। প্রায় সাত বছর ধরে পিলার দুটি এভাবেই আছে। এদের ওপর তৈরি হয়নি কোনো সেতু।

চেয়ারম্যান বলছেন, পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় সেতুর কাজ এগোয়নি। বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রামের পাশ দিয়ে গেছে রতনডারি খাল। ২০১৫ সালের মাঝামাঝির দিকে এই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময় নির্মিত হয় দুটি পিলার।

ব্রিজের অভাবে সর্বরামপুর, ভবানিপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, উত্তর ডাঙ্গাপাড়াসহ দুই ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাজ শুরুর পরেও থেমে যাওয়ায় ক্ষোভ জানান স্থানীয়রা।

রাণীনগর উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের শুরুর দিকে স্থানীয়দের কৃষিজমিতে সেচ ও নৌ চলাচলের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে কুজাইল স্লুইস গেট থেকে হাতিরপুল হয়ে রক্তদহ বিল পর্যন্ত খাল খনন করা হয়। এতে রতনডারি খালের পানি বেড়ে যায়।

এরপর থেকেই স্থানীয়দের দাবি ছিল একটি সেতুর। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের শেষ দিকে রতনডারি খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই কাজ পায় গোলাম কিবরিয়া নামের একজন ঠিকাদার।

সর্বরামপুর গ্রামের আব্দুল গফুর বলেন, ‘ব্রিজ না করে শুধু দুটি পিলার করে রেখেছে। এত দিনেও কাজ শেষ করতে পারেনি। এটা কী ধরনের কথা? খালের দুই পারে ১৫টার মতো গ্রাম আছে। তারা যাতায়াত করতে পারে না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পারাপারে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়।

‘খালের ওপারের ৫ থেকে ৬টা গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সর্বরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। আবার খালের ওপারে অনেক কৃষিজমি আছে। কৃষিপণ্য এ পাশে আনতে সমস্যা হয়। কবে ব্রিজ হবে কিছুই জানি না। আর কিছুদিন পর ব্রিজ না হলে আমরা এই দুই পিলারই ভেঙে ফেলব।’

সর্বরামপুর সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গুলনাহার খানম জানান, এই স্কুলে খালের ওপারের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। বর্ষা মৌসুমে শিশুদের যাতায়াতে খুব কষ্ট হয়। সব সময় নৌকাও পাওয়া যায় না। এ কারণে অনেক শিশুই তখন নিয়মিত স্কুল করতে পারে না। অনেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে কুজাইল বাজার হয়ে স্কুলে আসে।

ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মিনা বেগম বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ কি আমাদের সঙ্গে মশকরা করার জন্য এটা করে রেখেছে? তারা যদি জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকত তাহলে এমন করত না। এভাবে সরকারের বদনাম হচ্ছে। আমরা দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। নাহলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।’

‘বর্তমান সরকার এত উন্নয়নমূলক কাজ করছে, কিন্তু সামান্য একটি ব্রিজ নির্মাণের অভাবে আমরা অবহেলিত। কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথাই নেই’, বলেন এনায়েতপুর গ্রামের আব্দুল বারি।

সেতুর অসম্পূর্ণ কাজের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি রাজি হননি। উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর চাইলে তারা দেননি।

তবে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন রাণীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ।

তিনি বলেন, ‘ব্রিজের কাজ শেষ করতে এখনও ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদের তহবিলে এই পরিমাণ টাকা না থাকায় কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। চলতি বছর কিছু বরাদ্দ আসবে। তবে সেটা ব্রিজ নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত নয়।

‘আমাদের এমপি আনোয়ার হোসেন হেলাল সাহেব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন বরাদ্দ প্রাপ্তির জন্য। আমরা চেষ্টা করছি ব্রিজের নির্মাণকাজ যেন দ্রুত শেষ করা যায়।’

এ বিভাগের আরো খবর