একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরে অবস্থিত কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী নাটু বাবুর জমিদার বাড়িটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়কেন্দ্র। এখানে বসেই পাকিস্তানি সৈন্যদের মোকাবেলার নানা পরিকল্পনা করতেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ জমিদার বাড়িটি পরিদর্শন করেছেন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ। সোমবার উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের জমিদার বাড়ির বধ্যভূমিতে ‘গণহত্যা ৭১’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনে গিয়ে ঘুরে দেখেন এটি।
এ সময় ভারতের সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না, বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায়, উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন ডাকুয়া, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল কাদের হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
ডক্টর বিনয় জর্জ বলেন, ‘বাংলাদেশ তার স্বকীয়তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ঐতিহাসিক এসব জায়গা সংরক্ষণ করবে।’ এক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা এ দেশের মানুষের পাশে আগেও যেমন ছিল, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এর আগে ডেপুটি হাই কমিশনার বিনয় জর্জ ও সহকারী হাই কমিশনার রাজেশ কুমার রায়না বধ্যভূমিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তারা প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর ঘুরে দেখেন। পরে তারা জমিদার বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
চারুকলার উদ্যোগে দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ২১টি চিত্রকর্ম। রঙ তুলির আঁচড়ে চিত্রকর্মগুলোতে তুলে ধরা হয় একাত্তরের পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়াবহতা ও নৃশংসতা।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। নাটু বাবুর প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারসহ সবধরণের সহযোগিতা দেয় নাটু বাবুর পরিবার। স্কুলটিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হামলা চালালে এই জমিদার বাড়িতেই চলে প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা। পরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতেই শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধাদের এ আশ্রয়দাতা।