প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পটিকে স্থায়ী কাঠামো দিতে একটি এজেন্সিতে রূপান্তর করতে যাচ্ছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘অথরিটি টু ইনোভেশন (এটুআই) আইন ২০২২’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ যেহেতু মধ্যম আয়ের দেশ হচ্ছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের একটা এজেন্সি টু ইনোভেইট আইন ২০২২ প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
‘মূলকথা একটা এজেন্সি হবে আর কি। এখানে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, যার সভাপতি থাকবেন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। এজেন্সির একজন প্রধান নির্বাহী থাকবেন। ওপেন মার্কেট থেকে তাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া হবে। তার যে মূল কাঠামোটা হবে, সেখানেও পিএইচডি ডিগ্রি লাগবে, বাইরের মাস্টার্স ডিগ্রি লাগবে। আইটিতে বা আইটি বিজনেস বা সল্যুশনে।’
তিনি বলেন, ‘এই রকম অফিসার যারা থাকবেন, তাদেরকেও উনারা ফিক্সড করে নেবেন। একটা সার্টেইন রেঞ্জে বেতন ফিক্সড করে নিয়ে নেবেন। এজেন্সি স্বায়ত্বশাসিত থাকবে, স্বনির্ভর থাকবে। তাদের বাজেট, টাকা পয়সা সে ব্যাপারে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে।’
এজেন্সির কাজ কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জনবান্ধব সেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা। আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী যে কোনো কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ।
‘বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের অগ্রসর প্রযুক্তি সম্পর্কিত দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রণোদনা এবং জনসচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদান। জনকল্যাণে প্রযুক্তি বিষয়ক উন্নত গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণায় উদ্ভাবিত পণ্য ও সেবার মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সহায়তা করা।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, শিল্প, শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশাসহ দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমের অথরিটিকে বৈশ্বিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠাকরণ। এমনিতে নর্মালি যে কাজ তারা করে সেগুলো করবে।
‘এদের একটি তহবিল থাকবে। যা এজেন্সি টু ইনোভেইট তহবিল নামে অভিহিত হবে। এজেন্সি তাদের আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ করবে এবং বার্ষিক অডিট করবে সিএন্ডএজি অডিট করে সরকারের কাছে জমা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘এটুআই প্রকল্প আর থাকবে না, এটা বডি হয়ে যাচ্ছে। একটা সংবিধিবদ্ধ বডি হয়ে যাচ্ছে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ঠিক অটোনোমাসও না, তারা একটি বিজনেস ওরিয়েন্টেড এজেন্সি হবে। প্রধান নির্বাহী মার্কেট থেকে হায়ার করবে। অনেক কোম্পানি যে রকম করে। মেইন স্ট্রাকচারে যারা থাকবেন, তাদেরকেও যেন সেভাবে হায়ার করে। ভালো লোকজন আসবে।’
এজেন্সিতে সরকারের প্রভাব থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের একটা ব্যাপার তো থাকবে। তাদের অডিট হবে। মিনিস্টার সাহেবরা থাকবেন। তাদের আরও বেশি লিবার্টি থাকবে। তারা তাদের বোর্ডের মাঝে এপ্রুভ করে কাজগুলো করে নেবেন। তারা এপ্রুভ করে বাইরে থেকেও ফান্ড নিতে পারবে।’
বর্তমান প্রকল্প থেকে লোকবল নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে খন্দকার আনোরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তারা দেখবে। কারণ, অ্যাপিলেট ডিভিশনের একটা রায় আছে, ১৯৯৭ সালের পরের প্রজেক্টের লোককে রেভিনিউতে নেয়া যাবে না। কিন্তু যখন অথরিটি হবে, তখন তারা দেখবে ওদের ওখানে কীভাবে করবে।
‘সরকারের কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে। কেবল মন্ত্রণালয় কেন, বাইরের কাজের সাথেও সম্পৃক্ত থাকতে পারবে। অনেক টাকাপয়সা আয় করতে পারবে। ভালো একটা আয়ের উৎসও হতে পারে। নিজস্ব ফান্ডই হয়ে যাবে কয়েক বছরের মধ্যে। ভালো আয় করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। মূল স্ট্রাকচারটা তারা উন্মুক্ত মার্কেট থেকে নিয়ে নেবে।’