পাবনায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত কাজাখস্তানের নাগরিক ভ্লাদিমির শভেটস ছুরিকাঘাতে নিহতের ঘটনায় রোববার রাতে ঈশ্বরদী থানায় মামলা হয়েছে।
নিকিমত এটমস্ট্রয় কোম্পানির শাখা পরিচালক আইউরি ফেডোরভ এই মামলা করেন। মামলায় ৪৪ বছর বয়সী আরবানভিচুস ভিটালি, ৪২ বছরের ফেদারোভিচ হেনাডজ ও ৪৩ বছরের মাতসভেইউ উলাদজিমির নামের তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা সবাই বেলারুশের নাগরিক। প্রকল্পের ‘রোসেম’ নামের একটি রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হান পারভেজ তিন জনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রোববার দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ভ্লাদিমিরের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের হিমাগারে পাঠনো হয়েছে।’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও রূপপুর প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নিহত ভ্লাদিমির শভেটস রূপপুর প্রকল্পে ‘নিকিমত এটমস্ট্রয়’ নামে একটি বিদেশি সাব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক পরিচালক বা ফোরম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তার ভাই বেরেজনয় আন্দ্রেও রূপপুর প্রকল্পের একটি সাব-ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে চাকরি করেন।
ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হান পারভেজ জানান, ভ্লাদিমিরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টাকাপয়সা পাওনা সংক্রান্ত বিষষে কিছুদিন ধরে জটিলতা চলছিল। এটা নিয়ে কথা বলতে গত শনিবার সন্ধ্যায় তার ভাই আন্দ্রেকে নিয়ে বেলারুশের তিন নাগরিকের কাছে যান। প্রকল্পের গ্রিনসিটি ভবনের কক্ষটিতে অল্প সময়র পর তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সে সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ভ্লাদিমির ও আন্দ্রে।
পরে সেখানেই মারা যান ভ্লাদিমির। পরে সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ সেখান থেকে একটি ছুরি জব্দ ও ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ওই তিন বেলারুশীয় নাগরিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস জানান, গ্রিনসিটি আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন ভবনে প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি থাকেন। এদের মধ্যে রাশিয়ান, বেলারুশ, কাজাখস্তান, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে রূপপুরে নিরাপত্তায় থাকা বিভিন্ন বাহিনী তদন্ত করছে।