নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধা বেলা হরতালের প্রভাব ময়মনসিংহে খুব একটা চোখে পড়েনি।
নগরীতে চলতে দেখা গেছে বাসসহ ছোট সব ধরনের যানবাহন। রাস্তা-ঘাটে মানুষের চলাচল ছিল অন্যান্য সব দিনের মতই স্বাভাবিক। দোকান-পাটও খুলতে দেখা গেছে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে।
সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জোটের নেতা-কর্মীরা মিছিল, সমাবেশের চেষ্টা করলেও তেমন একটা সফল হতে পারেননি, পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে।
সকালে নগরীতে মিছিল শেষে স্টেশন রোড এলাকায় সমাবেশের চেষ্টা করলে র্যাব বাধা দেয়। এ সময় তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হরতালকারী ও র্যাবের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে র্যাব কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা গণগ্রেপ্তারের দাবি জানালে র্যাব সদস্যরা চলে যান।
এদিকে হরতালে বিএনপি নৈতিকভাবে সমর্থন দিলেও দলটির নেতা-কর্মীদের কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
সিপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিতে এসে র্যাব কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটকের চেষ্টা করে। আমরা গণগ্রেপ্তার দাবি জানালে তারা পিছু হটেন।’ এ সময় কেন্দ্রীয় যেকোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
এদিকে হরতালে ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। সড়ক, দোকান-পাট সবখানেই সাধারণ মানুষের চলাচল ছিল অন্যান্য সব দিনের মতই স্বাভাবিক।
বেলা ১১টার দিকে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজমোড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে থাকা যাত্রী আহম্মেদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গৌরীপুর থেকে ত্রিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। ভেবেছিলাম হরতালে গন্তব্যে যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু এসে দেখি হরতালে গণপরিবহন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়েনি। অন্য দিনের মতোই সব স্বাভাবিক।’
শহরের গাঙ্গিনাড়পাড় এলাকায় ইলেকট্রনিকসের ব্যবসা করেন রাবিন্দ্রনাথ আচার্য। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকাল ৯টায় দোকান খুলি। আজকেও এ সময়ে দোকান খুলেছি। অটোরিকশা, রিকশাসহ সবকিছু আগের মতোই চলছে। দোকানপাটে ক্রেতারও কমতি নেই।’
স্টেশন রোড এলাকার ব্যবসায়ী করিম মিয়া বলেন, ‘সকালে মিছিল শেষে হরতালকারীরা সমাবেশ করতে চেয়েছিল। তখন র্যাবের সঙ্গে বাকবিতন্ডার পর নেতা-কর্মীরা চলে যায়। এতে অনেকে আতঙ্কিত হলেও কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।’
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘কাউকে আটক করা হয়নি। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে র্যাব দ্বায়িত্ব পালন করছে।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘হরতালের কর্মসূচি মাথায় রেখে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ আর হরতালে রাস্তাঘাটে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে দাবি করেন তিনি।