‘মানুষ বলে দু একটা গাড়ি ভেঙে ফেললে হরতাল হয়, না ভাঙলে হরতাল হয় না। হরতালের এমন মেসেজ (বার্তা) বাম গণতান্ত্রিক জোট দিতে চায় না। আমরা দেশের মানুষকে হরতালের কারণ জানাতে চেয়েছি।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বগুড়ার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম পল্টু শহরের সাতমাথায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে এ সমাবেশ আয়োজন করে জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই হরতাল পালন করা হয়।
বাসদের আহ্বায়ক বলেন, দেশে দ্রব্যের দাম বাড়লে সরকার বলে এর বেশি দাম বাড়ানো যাবে না। কখনও বলে না দাম কমাতে হবে। এ কথা কাদের বলা হয়; ব্যবসায়ীদের।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে এক রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করা হলো- হরতালে বের হয়েছো কেন? সে বলল- পেটের দায়ে; জানি বের হলে আপনারা রিকশা ভাঙবেন না। আমরা জ্বালাও পোড়াও করার জন্য হরতাল করছি না।
‘আমাদের হরতাল দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার জন্য। কিন্তু এই মেসেজ কেউ দেয় না। আমরা বাম গণতান্ত্রিক জোট সেই মেসেজ দিচ্ছি।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের মালিক এখন পুলিশ, আমলা। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যারা চাকর, তারাই হয়েছে মালিক। তারা রেশন পায়।
‘অথচ রাষ্ট্রে মালিক দরিদ্র জনগণ। এই দরিদ্ররা দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বমুখী বাজারে রেশন পায় না। ঠিক মতো খেতে পায় না। পুষ্টিহীনতায় ভোগে। রাষ্ট্রের সেবকদের রেশন নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। কিন্তু দরিদ্র জনগণকেও তো দিতে হবে। সেটা দেবে কবে?’
আমিনুল ফরিদ বলেন, ‘আমাদের দাবি অল্প কয়েকটি। দেশের মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা। বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো। গ্যাসের দাম না বাড়ানো। এই দাবি নিয়েই আমাদের আন্দোলন। আজকের হরতাল কর্মসূচি।
‘এসব কথা বলতে গেলে পুলিশের গায়ে লেগে যায়। তারা হামলা করেন। রোববারও গাইবান্ধায় পুলিশের এমন হামলার শিকার হতে হয়েছে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, বাসদের সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, জেলা সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের আহ্বায়ক দিলরুবা নূরী, গণসংহতির আব্দুর রশিদ, সদর যুব ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদসহ আরও অনেকে।
হরতাল কর্মসূচিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন। শহর ঘুরে দেখা যায়, আধাবেলা হরতালের সব স্থানে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।