চুয়াডাঙ্গায় দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তার ছেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কয়েক দিন বিষয়টি গোপন থাকলেও বর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ছেলের বাল্যবিয়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই শিক্ষক। এ নিয়ে পুরো এলাকায় চলছে সমালোচনা।
বর আব্দুর রহমান সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের শিক্ষক শামসুন্নাহারের ছেলে। কনে শারমিন খাতুন একই উপজেলার ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার অসোক আলীর মেয়ে।
সোমবার সকালে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণি কক্ষের প্রথম বেঞ্চে বোরখা পরে ক্লাস করছে শারমিন খাতুন। তার হাতে এখনও রয়েছে বিয়ের মেহেদির রং।
এ সময় শারমিন জানায়, ৮ দিন আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। তার স্বামী এখন তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে।
ওই ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামসুন্নাহারও।
ছেলের বাল্যবিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে আব্দুর রহমান বেগমপুর যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। আমার মা খুব অসুস্থ। মায়ের ইচ্ছা নাতবউ দেখবেন।
‘মূলত তার ইচ্ছা পূরণ করতেই ছেলের বিয়ে দিয়েছি। গত ২০ মার্চ সদর উপজেলার ছোটশলুয়া গ্রামের অসোক আলীর মেয়ে শারমিন খাতুনের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়।’
তিনি জানান, বেগমপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম বিয়ে পড়িয়েছেন। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে, কিন্তু ছেলে ও মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি হয়নি।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাজি মফিজুল ইসলাম। বলেন, ‘আমি কোনো বাল্যবিয়ে পড়াইনি। সঠিক কাগজপত্র যাচাই না করে বিয়ে পড়াই না। আমার রেজিস্ট্রার খাতায় এই ধরনের কোনো বিয়ে নেই।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি শুনে খুব অবাক হয়েছি। একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে তিনি কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’