লিবিয়ায় গিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির বিশেষ সংবাদদাতা জাহিদুর রহমানসহ দুজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
পরিবারের ধারণা, ২৩ মার্চ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে জাহিদকে অপহরণ করা হয়েছে। তার সঙ্গে ছিলেন প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ও গাড়িচালক মোহাম্মদ খালেদ।
জাহিদের স্ত্রী তাসনিমা রহমান সোমবার সকালে নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানান।
তাসনিমা বলেন, ‘গত ৩ মার্চ জাহিদ লন্ডন যায়। সেখান থেকে লিবিয়া গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। ২৩ মার্চ ফোনে আমার সঙ্গে তার শেষ কথা হয়েছে। এরপর থেকে মোবাইল বন্ধ পাচ্ছি। কোনো খবরই পাচ্ছি না।
‘লন্ডনে যারা পরিচিত আছেন তারাও কিছু জানাতে পারছেন না। তাকে অপহরণ করা হয়েছে এটুকু জানতে পেরেছি।’
ইতালিতে বসবাসরত জাহিদুরের ঘনিষ্ঠ মাইনুল ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, ‘বিপদসংকুল লিবিয়াতে ভুল নেটওয়ার্কিং এবং অনিশ্চিত ত্রিপোলিতে ফিজিক্যাল মুভমেন্ট রিলেটেড পারসোনাল টেকনিক্যাল ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে নিখোঁজ সাংবাদিক জাহিদুর রহমানকে। সম্ভাব্য অপহরণকারী যেকোনো মাফিয়া গ্রুপের সঙ্গে মুক্তিপণ ডিল করা প্রয়োজন হয়ে পড়লে কেউ যেন বেশি চালাকির আশ্রয় না নেয়। সবার আগে জীবন।’
লিবিয়া থেকে ২৭ মার্চ ইস্তাম্বুলে ফেরার কথা জানিয়েছিলেন বলে ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন তার ঘনিষ্ঠ মরোক্কপ্রবাসী আলাউদ্দিন মাহমুদ সামির।
সামিরের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘...আমি আজ ইস্তাম্বুল যাচ্ছি কয়েক ঘণ্টার জন্য। ওখান থেকে লিবিয়া যাব। তারপর আবার ২৭ তারিখ ফিরব ইস্তাম্বুল। তখন এসে যোগাযোগ করব। …একটু আগে খবর পেলাম জাহিদ, তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার এবং তাদের ড্রাইভার লিবিয়াতে অপহরণ হয়েছে। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি যেন তারা নিরাপদে, সুস্থ শরীরে উদ্ধার হয়।’
সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকদের একজন জাহিদের ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখা যায়, গত ২২ মার্চ রাত ১টা ৪৯ মিনিটে অর্থাৎ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৩ মার্চ তিনি শেষ স্ট্যাটাস দেন। ত্রিপোলির করিন্থিয়া হোটেল থেকে চেক ইন দিয়ে তিনি ওই পোস্ট দিয়েছিলেন।
স্ট্যাটাসের শেষ দুই প্যারায় লেখেন, ‘এতক্ষণ নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আছি। ভালোই আছি। কিন্তু বের হতেই অনিশ্চয়তা। হোটেলের বাইরে এক অনিরাপদ রাজধানী। গৃহযুদ্ধকবলিত লিবিয়া বলে কথা! দেশ একটা। সরকার দুটো। এর বাইরে সংঘাতমুখর নানা দল, নানা গোত্র! যাই হোক। অনুগ্রহ করে প্রার্থনায় রাখবেন।’