হার্ট নিস্ক্রীয় হওয়া ৪২ বছর বয়সী এক নারীর ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে। বাংলাদেশের এ সফলতায় আবাক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকরা। এ তথ্য গর্বভরে জানালেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।
রাজধানীর সাতারকুল ইউনাইটেড ক্লাব হাউসে রোববার ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্লান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।
সেখানে অংশ নিয়ে এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টে অবাক বিশ্ব। যেদিন মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সেদিনই আমেরিকা থেকে একজন চিকিৎসক আমাকে ফোন করেন। তিনি জানতে চান আসলেই কাজটি করা হয়েছে কি না। এরপর তথ্য জেনে বলেন- আপনার দেশ একটি অসাধ্যকে সাধন করেছে।
‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট করার মতো হাসপাতাল এদেশে আছে কি না, চিকিৎসক ও প্রযুক্তি আছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অন্য দেশের চিকিৎসকরা। বিশ্বের অনেক চিকিৎসকই এটি বিশ্বাস করতে পারছেন না।’
মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট করা নারী উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, ‘কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা ছাড়া আমার তেমন কিছুই বলার নেই। আমার ধারণা ছিল না আমি সুস্থ হবো। আমাদের দেশের সেবার মান এখন অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক ভালো। এমন সেবা পেয়ে আমি গর্ববোধ করছি।’
নারীর স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আমার স্ত্রীর হার্টে সমস্যা। চিকিৎসার জন্য অনেক বার বিদেশ যেতে হয়েছে। বিদেশে চিকিৎসা নেয়া বেশ কষ্টের, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম দেশের মাটিতেই চিকিৎসা করাবো।
‘গত ২ মার্চ মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে আমার স্ত্রী দুদিন আগে বাসায় ফিরেছে। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ, শ্বাসকষ্ট ৯৯ শতাংশ কমে গেছে।’
ইউনাইটেড হসপিটালের প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় দিন দিন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। অনেক মানুষ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাওয়ার চেয়ে আমাদের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করছেন।
‘ইউনাইটেড হসপিটালে ২ মার্চ একটি মেকানিক্যাল হার্ট বা Left Ventricular Assist Device (LVAD) স্থাপন করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন হৃদপিণ্ডের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশে-বিদেশে চিকিৎসার পরও তার হৃদপিণ্ড প্রায় অকার্যকর ছিল। দেশের ভেতরে চিকিৎসাতেই এখন তিনি সুস্থ।’