স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হবে। তা হয়নি, উল্টো এখন হেঁটে চলাই হয়ে গেছে অনিশ্চিত।
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে বাড়ি মেয়েটির। বয়স এখন ১৭। তার দুর্ভোগের শুরু আরও ৭ বছর আগে ২০১৫ সালে। তখন সে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
নাম আফরিনা খাতুন। পড়ত বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুল থেকে খেলার আয়োজন করলে তাতে অংশ নিত। উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে দলের হয়ে খেলত। পরে খেলতে যায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে।
স্কুল দলের অধিনায়ক ছিল সে। খেলার মাঠেই পায় আঘাত। তখন বোঝা যায়নি সেটি এত গুরুতর। আঘাতের স্থানে প্রচণ্ড ব্যাথা শুরু হয় কয়েক বছর পর। সেই সঙ্গে দিনে দিনে ফুলতে শুরু করে।
বর্তমানে রাজধানীর মহাখালীর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে আফরিনা। সে বলে, ‘আমার আর কষ্ট সহ্য হয় না ভাইয়া। আমাকে আপনার বাঁচান। আমি আর ব্যাথা সইতে পারছিনে। আমার আব্বা আমার জন্য সারারাত ধরে জেগে থাকে। আমার পা ডলে দেয়। এই কষ্ট আর সইতি পারছিনে।’
আফরিনার বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমার মেয়ের কোনোদিন এক ছাড়া দুই হয়নি রোল। মেয়ের স্বপ্ন ছিল শিক্ষিত হবে, খেলোয়াড় হবে আমাগের মুখ উজ্জ্বল করবে। কিন্তু কী হয়ে গেল আমার মেয়ের!
‘ব্যাথার জ্বালায় দিন রাত-কান্না কাটি করে। আমি তো কিছু করতি পারিনে। যা টাকা পয়সা ছিল তা তো শ্যাষ হয়ে গেছে। আমার মেয়েটাকে এখন চিকিৎসা করাতে ৩/৪ লাখ টাকা দরকার। এত টাকা আমি কনে পাব?’
সহায়তার জন্য আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার আর বড়লোকরা যদি আমাকে একটু হেল্প করত, আমার মেয়েডারে বাঁচাতি পারতাম।’
আফরিনার সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছে শৈলকুপা রক্তাদাতা সংঘ নামে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। তারা চাঁদা তুলে মেয়েটির চিকিৎসা করিয়ে আসছে এতদিন।
সংগঠনের পরামর্শক ও অ্যাডমিন ও উত্তর মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোক্তাদির রুমী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সদস্যরা মেয়েটির চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে যাচ্ছে। তারা নিজেরাও কিছু সাহায্য করছে।
‘মেয়েটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখন রিপোর্ট এলে তার ভর্তির ব্যাপারে ডাক্তার পরামর্শ দিবেন।
‘মেয়েটির বাবা খুবই অসহায়। সমাজের বিত্তবানরা যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে মেয়েটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।’