বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১০ মাস পর উৎপাদনে কেপিসিএল

  •    
  • ২৭ মার্চ, ২০২২ ১৮:২৬

সরকার যদিও ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে নতুন করে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দিয়েছে, তার পরও কেপিসিএলের দুই কেন্দ্রের জন্য খরচ ধরেছে পৌনে ২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খুলনার গোয়ালপাড়ায় ১১৫ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের খরচ হবে ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যশোরের নওয়াপাড়ায় ৪০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে দুই বছরে সরকারের খরচ হবে ৪৬০ কোটি টাকা।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরও দুই বছর বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেয়ার পর মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আবার চালু করেছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড বা কেপিসিএল।

রোববার ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে কোম্পানির পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

২০২১ সালের মে মাসে কোম্পানিটির যথাক্রমে ১১৫ ও ৪০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্রের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর সেগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। এরপর সেটি আবার চালু করতে প্রায় ১০ মাস লেগে গেল।

সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর বাড়াবে না- এমন সিদ্ধান্ত হলেও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে মেয়াদ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

দীর্ঘ আলোচনা শেষে গত ২৩ মার্চ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কেপিসিএলের দুটিসহ মোট পাঁচটি কেন্দ্র থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেয়া হয়।

আগেই জানানো হয়েছিল, নতুন করে অনুমোদন হবে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে। অর্থাৎ যতটুকু বিদ্যুৎ সরকার কিনবে, ততটুকুর টাকাই দেয়া হবে। আগের মতো কেন্দ্র বসিয়ে ভাড়া অর্থাৎ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট সরকার দেবে না।

লেনদেন চলাকালে কেপিসিএলের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের জন্য বার্তা আসে। এতে বলা হয়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে তাদের খুলনায় ১১৫ মেগাওয়াটের কেপিসিএল টু ও যশোরের নওয়াপাড়ায় ৪০ মেগাওয়াটে কেপিসিএল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দুই বছরের জন্য বিদ্যুৎ কেনার কথা জানানো হয়েছে মৌখিকভাবে। তবে কোম্পানিকে এখনও লিখিত কোনো আদেশ দেয়া হয়নি।

এতে আরও বলা হয়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মৌখিকভাবে জানানোর পর গত ২৪ মার্চ বিকেল থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সরকার যদিও ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ ’ ভিত্তিতে নতুন করে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দিয়েছে, তার পরও কেপিসিএলের দুই কেন্দ্রের জন্য খরচ ধরেছে পৌনে ২ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে খুলনার গোয়ালপাড়ায় ১১৫ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের খরচ হবে ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যশোরের নওয়াপাড়ায় ৪০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে দুই বছরে সরকারের খরচ হবে ৪৬০ কোটি টাকা।

যশোরের নওয়াপাড়ায় ৪০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র

একই দিন আর যে তিনটি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেয়া হয়, তার মধ্যে সামিট পাওয়ারের নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে ১০২ মেগাওয়াটের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাবদ সরকারকে পরিশোধ করতে হবে ১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা।

নারায়ণগঞ্জ মেঘনা ঘাটে ১০০ মেগাওয়াটের ওরিয়ন পাওয়ার মেঘনা ঘাট কোম্পানি পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত নয়। তবে এটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মার সহযোগী কোম্পানি। এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারকে খরচ করতে হবে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

বাকি কেন্দ্রটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াটের ডাচ-বাংলা পাওয়ার অ্যাসোসিয়েট থেকে বিদুৎ কেনা বাবদ সরকারের খরচ হবে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

কেপিসিএলের আদ্যোপান্ত

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি হয় গড়ে ২১১ টাকায়। এটি যে মেয়াদি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তা বন্ধ হয়ে যাবে, সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধারণা ছিল না।

কোম্পানিটির বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল মোট তিনটি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে একটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিষয়টি নিয়ে জানতে পারে।

এর পর থেকে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ে লভ্যাংশ পেয়ে আসছে বিনিয়োগকারীরা। এই দুটির মধ্যে ১১৫ মেগাওয়াটের কেপিসিএল-১-এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ মে। আর ৪০ মেগাওয়াটের নওয়াপাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয় ২৮ মে।

পটুয়াখালীর ইউনাইটেড পাওয়ার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩৫ শতাংশের মালিকানা আছে কেপিসিএলের

এই দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কেপিসিএলের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল সহযোগী কোম্পানি ইউনাইটেড পাওয়ার পায়রার ৩৫ শতাংশের মালিকানা। তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ে চলতি বছর দুই প্রান্তিকে কেপিসিএল মুনাফা করতে পারেনি। শেয়ারপ্রতি ১৮ পয়সা লোকসান দিয়েছে কেপিসিএল।

গত বছরের ২০ মে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়াতে আমাদের চেষ্টা-তদবির অব্যাহত রয়েছে।’

গত ২৮ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার। আর দশমিক ১৮ শতাংশ আছে বিদেশিদের হাতে। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে আছে মোট শেয়ারের ৬৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

কোম্পানিটির শেয়ারদর গত এক বছরে সর্বোচ্চ ছিল ৫২ টাকা ৫০ পয়সা। তবে অনুমোদনসংক্রান্ত জটিলতার কারণে একপর্যায়ে তা ২৮ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে এসেছিল।

বুধবার মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্তে এক দিনেই শেয়ারদর প্রায় ১০ শতাংশ বাড়ে। দ্বিতীয় দিন লেনদেনের শুরুতে আবার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে লেনদেন শুরু হলেও বেলা শেষে আগের দিনের দাম ৩৫ টাকায় নেমে আসে, যদিও একপর্যায়ে দর ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা হয়ে গিয়েছিল।

এ বিভাগের আরো খবর