প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকদের বেশ ভিড় থাকে। আগে থেকে হোটেলে বুকিং দিয়ে না রাখলে থাকার জায়গার অভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পর্যটকদের। কাউকে কাউকে সাগরপাড়েই রাত পার করতে হয়।
তবে এবার হতাশার কথা জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সাপ্তাহিক ছুটি ও স্বাধীনতা দিবস মিলিয়ে দুই দিনের ছুটিতে আশা অনুযায়ী পর্যটক পাননি তারা।
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘প্রতি বছর এ সময় আবাসিক হোটেলগুলোর ৮০ থেকে ৯০ ভাগ রুমে বুকিং দেয়া থাকে। তবে এবার অর্ধেকের বেশি রুম খালি পড়ে ছিল। বৃহস্পতি-শুক্রবার ৪০ শতাংশ রুমে বুকিং থাকলেও শনিবার একেবারেই ছিল না।’
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার স্বাধীনতা দিবসে সেভাবে পর্যটকের দেখা মেলেনি। অন্য বছর এ সময় হোটেলে রুম পেতে পর্যটকদের গলদঘর্ম হয়ে যেত। এমন পরিস্থিতিও গেছে যে হাজারো পর্যটক রাস্তায় ও বিচে ঘুমিয়েছে।
‘এবার করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পরও কক্সবাজারে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর গলাকাটা বাণিজ্যের কারণে পর্যটকে এই ধস নেমেছে। পর্যটন ব্যবসার জন্য বিষয়টা উদ্বেগজনক।’
কক্সবাজারে বিভিন্ন নেতিবাচক ঘটনার সংবাদকে পর্যটক ঘাটতির কারণ হিসেবে মনে করেন সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল ভিসতা বের ব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, ‘ঠিক কী কারণে মানুষ আসেনি তা বলা মুশকিল। তবে নেতিবাচক নিউজ এর বড় কারণ হতে পারে। ভুল নিউজ প্রচারে মানুষ কক্সবাজার বিমুখ হয়েছে।’
এক সপ্তাহ আগেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শুক্রবার ও শবে বরাত মিলিয়ে তিন দিনের ছুটিতে ঢল নেমেছিল সাগরপাড়ে। সে সময় ৫০ কোটি টাকার ব্যবসার কথা জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার পর্যটন গলফ মাঠের গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারাদার কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতু নিউজবাংলাকে জানান, গত সপ্তাহের ছুটিতে পর্যটকদের ৩০০টি বড় বাস এখানে পার্ক করা ছিল। এ ছাড়া জায়গা না পেয়ে স্থানীয় ইলিয়াছ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠসহ বিভিন্ন জায়গায় ২৫০ বাস পার্ক করা হয়।
সেতু বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে ১০০টির মতো বাস পার্ক করা ছিল। অন্যান্য ছুটির তুলনায় এবার কক্সবাজারে পর্যটক আসেনি বললেই চলে।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে মানুষের তেমন ভিড় ছিল না। আগে এ সময় অনেক পর্যটক আসতো।’