স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির আসনে বসে থাকা এমপিকে রাজাকারের ভাতিজা বললেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার চেয়ারম্যান। ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ পরে ভাইরাল হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
শনিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা বরুড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-৮ বরুড়া আসনের এমপি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এএনএম মইনুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এমপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আজ যাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে তিনি একজন রাজাকারের ভাতিজা।’
এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমপিকে প্রধান অতিথি করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান চেয়ারম্যান মইনুল।
চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চত্বরে অনুষ্ঠিত ওই সভাস্থলে শোরগোল বাঁধে। হলরুমের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা চেয়ারম্যান মইনুলের কর্মী সমর্থকরা চিৎকার করে তার বক্তব্যকে সমর্থন জানাতে থাকে।
বিপরীতে, এমপি নজরুলের সমর্থকরা ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিলের উপক্রম করে। এ অবস্থায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে বরুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
এদিকে বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মাইনুল বলেন, ‘আমার কাছে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত আছে। তিনি (এমপি) একজন রাজাকারের ভাতিজা।’
মাইনুল দাবি করেন, বরুড়ার মাটিতে যার নেতৃত্বে রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী গঠন করা হয়েছিল তিনি হলেন আদ্রা ইউনিয়নের বিতর্কিত সিএসপি অফিসার শামসুল আলম মিয়া। দেশ বিরোধী অবস্থানের কারণে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু তার নাগরিকত্ব বাতিল করেন। সেই শামসুল আলম মিয়ার ভাই কুট্টু মিয়ার ছেলে নাছিমুল আলম চৌধুরী।
মইনুল বলেন, ‘যে স্বাধীনতা বিরোধীরা মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, ভাইদের পাখির মতো গুলি করে মেরেছে, শহীদদের রক্তে রঞ্জিত যাদের হাত, সেই রাজাকার পুত্রের হাতে সংবর্ধনা দেয়া হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমি কীভাবে মেনে নেব?’
পরে এ বিষয়ে এমপি নজরুল বলেন, ‘যাকে রাজাকার বলা হচ্ছে তিনি আমার আপন কেউ নন। প্রতিবেশী চাচা। আমার বক্তব্যে বিষয়টি পরিস্কার করেছি।’
এদিকে ভরা মজলিশে এমপিকে রাজাকারের ভাতিজা সম্বোধন করায় বিষয়টি এখন কুমিল্লাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।