ব্যাপক ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে এবারও সাভারে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ দলের নেতাকর্মীরা।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেককেই বেদিতে উল্টে পড়ে যেতে দেখা যায়। বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের এমন চিত্র দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বাহার আহমেদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, সকাল ৯টার দিকে বিএনপির লোকজন স্লোগান দিচ্ছিল। এ সময় বেদির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেও ধাক্কাধাক্কির জন্য পারিনি। পরে তারা চলে যাওয়ার পর বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, ‘বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বরাবরই জাতীয় স্মৃতিসৌধে আমরা বিশৃঙ্খলা দেখেছি। নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কির কারণে সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও নেয়া কষ্ট হয়ে যায়, দাঁড়িয়ে থাকাও দুরূহ হয়ে পড়ে। এটা খুবই দুঃখজনক!’
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এলেই বেদির সামনে ধাক্কাধাক্কি ও ঠেলাঠেলি শুরু হয়। এ সময় হ্যান্ডমাইকে তাদের শান্তভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বলা হয়। কিন্তু তারা গুরুত্ব না দিয়ে হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করতে থাকে।
‘এ সময় ভিড়ের মধ্যে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে। গত বিজয় দিবসেও বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সাংবাদিক, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকের মোবাইল খোয়া গিয়েছিল। আজ স্বাধীনতা দিবসেও বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বেশ কয়েকজন পকেটমার আটক করেছি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যখন স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম, তখন কোনো বিশৃঙ্খলা দেখিনি। ব্যাপারটা যেহেতু সরকার নিয়ন্ত্রণ করে, ওখানে যারা নিরাপত্তা বাহিনী আছে তারা যদি এমন প্রক্রিয়া তৈরি করে যে সারিবদ্ধভাবে ফুল দিতে হবে, তাহলে হয়তো এমনটা হবে না।
‘ওখানে মূলত সকালে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে যাওয়ার পরেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বিশেষ করে বড় দুই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা হুড়োহুড়ি করে। যারা ওখানে দায়িত্বে আছেন, তারা যদি যথাযথ গাইডলাইন করে দেন, তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এটা আসলে যার যার সতর্ক থাকার কথা। যার যার বোধ আসার কথা। সবাই যদি সতর্ক থাকে তাহলে এটা থেকে উত্তরণ সম্ভব।'
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা না পারে তাহলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বা রোভার স্কাউটকেও দায়িত্ব দিতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন তারা করছে। আমরা কেন পারব না। আমাদের দায়িত্ব দেয়া হলে আমরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। এখানে কর্তৃপক্ষেরও ব্যর্থতা রয়েছে।’