বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বর্বরতা মনে করে আজও আঁতকে ওঠেন বীরাঙ্গনা

  •    
  • ২৬ মার্চ, ২০২২ ১৯:০৭

বীরাঙ্গনা রহিমা বলেন, ‘৭১ সালের বর্বরতার কথা মনে করতে চাই না। এখনো মনে হলে আঁতকে উঠি। যুদ্ধকালীন সময়ে মা-বাবার সঙ্গে গ্রামে ছিলাম। বিভিন্ন সময় রাজাকাররা এসে গোলা থেকে ধান, গাছ থেকে বিভিন্ন ফল পেড়ে নিয়ে যেত। বাড়ির উঠোনে থাকা হাঁস-মুরগি নিয়ে যেত। শুধু তাই নয়, একসময় তুলে নিয়ে আমাকেও।’

তরুণ প্রজন্মের কাছে হরহামেশাই মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সে সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার। তবে সে সময় নির্যাতনে শিকার অনেক নারীর গল্প আরও বেশি বিভীষিকাময়।

দেশের জন্য পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে যেসব নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের একজন ফেনীর ছাগলনাইয়ার বীরাঙ্গনা রহিমা বেগম। সম্প্রতি তার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, একাত্তরের সেই রোমহর্ষক কাহিনী।

২০১৮ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৫৪তম সভার সিদ্ধান্তে ৩৮ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সেই তালিকায় বীরাঙ্গনারা স্বীকৃতি পান রহিমা।

রহিমার পিতার বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া হরিপুরে। তার দুই ভাই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

রহিমা বলেন, ‘৭১ সালের বর্বরতার কথা মনে করতে চাই না। এখনো মনে হলে আঁতকে উঠি। যুদ্ধকালীন সময়ে মা-বাবার সঙ্গে গ্রামে ছিলাম। বিভিন্ন সময় রাজাকাররা এসে গোলা থেকে ধান, গাছ থেকে বিভিন্ন ফল পেড়ে নিয়ে যেত। বাড়ির উঠোনে থাকা হাঁস-মুরগি নিয়ে যেত। শুধু তাই নয়, একসময় তুলে নিয়ে আমাকেও।’

‘একাত্তরের অক্টোবর-নভেম্বর নারকীয় নির্যাতন-যন্ত্রণায় কেটেছে প্রতিটি ক্ষণ। প্রতি রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়ে জ্ঞান হারাতাম। ফেনী পাইলট হাইস্কুলের একটি কক্ষে পাক হানাদারদের নির্যাতনের কক্ষ ছিল। আর কোনো নারী ছিল কি না জানি না। ফেনী পাইলট ও ফেনী কলেজ কম্পাউন্ডে তখন পাক হানাবাদ বাহিনীর বড় ক্যাম্প ছিল। প্রচুর মানুষকে এখানে মেরে ফেলা হয়।’

দেশের জন্য সভ্রম হারিয়েছেন রহিমা। অথচ সমাজ থেকে বাঁচতে স্বাধীনতার পর কিছুদিন গোপনে থাকতে হয়েছিল তাকে। ১৯৭৬ সালে বিয়ে করেন তিনি। একসময় স্বামী সব জেনে যায়। স্বামী মেনে নিলেও সন্তানরা সহজে মানতে পারেননি।

রহিমা জানান, হরিপুরে বিভিন্ন সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছদ্মবেশে আসতেন। কখনো দিনমজুর, কখনো জেলে সেজে রাজাকার ও পাক বাহিনীর ওপর নজর রাখতেন তারা। সবসময় রহিমার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের দেখা হত। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বোন হওয়ায় তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে।

তিনি জানান, বিভিন্ন সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেনেড, গুলি নিজের কাছে রাখতেন। কাছাকাছি দূরত্বে নিজেই অনেক বার গ্রেনেড ও কার্তুজ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এসব তথ্য রাজাকারদের কাছে একসময় পৌঁছে যায়। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘চাইতাম তারা যেন আমাকে মেরে ফেলে। কিন্তু না, শুধু আমার সম্ভ্রমকে হত্যা করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর