একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার স্মরণে ও দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে পাবনায় আলোর মিছিল ও প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানরা এই কর্মসূচীর আয়োজন করে।
রাত ৮টায় শহরের মুক্তিযোদ্ধা চত্বর থেকে মশাল জ্বালিয়ে মিছিল বের করেন তারা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মাজহারুল ইসলাম মানিকের উদ্যোগে এই মিছিল বের হয়। কালরাত্রির স্মরণে আলোর মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরেই এসে শেষ হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পক্ষে মাজহারুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা।’
মানিক জানান, পাকিস্তান বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞে শহীদদের স্মরণ করে এবং নতুন প্রজন্মকে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানাতেই আলোর মিছিলের কর্মসূচি। পাশাপাশি ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞের দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রদানেরও দাবি জানান তিনি।
এ সময় পাবনার মুক্তিযুদ্ধের গণকবর, বধ্যভূমি ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংরক্ষণেরও দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদীপ শিখার আলোয় আলোকিত করে ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে শহীদদের স্মরণ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরাও। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপির উদ্যোগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে মোমবাতি হাতে নীরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তারা।
মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম, আওয়ামীলীগ নেতা কামরুজ্জামান রকি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুমন, সাবেক ছাত্রনেতা আরমান হোসেনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
জেলা আওয়ামী লীগ ও অংগসংগঠনের আয়োজনে মোমবাতি প্রজ্বালন
রফিকুল ইসলাম রুমন বলেন, ‘২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত্রির দুঃসহ ঘটনা আমাদের সবাইকে জানাতে হবে, ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের চাওয়া থাকবে আমাদের জাতীয় গণহত্যা দিবসকে যেন বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। আমরা সবাই যদি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করি, এই চেতনা ধারণ করি, লালন করি এবং তার জন্য সংগ্রাম করি- তাহলে অবশ্যই এই স্বীকৃতি আমরা একদিন পাবোই।’
মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন বলেন, ‘আজ সেই রাত, যে রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর অতর্কিতে হামলা করেছিল পাক হানাদার বাহিনী। এই অনুষ্ঠান থেকে ২৫ মার্চের গণহত্যার সকল শহীদ এবং মা বোনদের সম্ভ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। স্মরণ করছি তাদের অবদান এবং এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’