রাত পোহালেই মহান স্বাধীনতা দিবস। প্রতি বছরের এই দিনে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে গোটা জাতি।
২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সৌধপ্রাঙ্গণ। জাতির গৌরবের এই দিনে নামবে লাখো মানুষের ঢল। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে স্মৃতিসৌধের বেদি।
দিবসটি উপলক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। তিন বাহিনীর কুচকাওয়াজের প্রস্তুতিও শেষ।
গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, এক মাস ধরে প্রায় ১০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী স্মৃতিসৌধের ফটক থেকে মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা ধুয়ে-মুছে চকচকে করে তুলেছেন। পরিষ্কার করা হয়েছে সৌধচূড়া থেকে হেঁটে যাওয়ার পথগুলোও (হেরিংবন্ড)। শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো গাছগুলো ছেঁটে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে। বসানো হয়েছে বাহারি রঙের ফুলের টব।
লেকগুলোকে পরিষ্কার করে লাগানো হয়েছে রক্তিম বর্ণের শাপলা। সাদা রঙের শুভ্রতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুরো সৌধ এলাকা। শেষ হয়েছে আলোকসজ্জার কাজও। নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সিসিটিভি।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর দেশি-বিদেশি কূটনীতিকসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য সৌধপ্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে এক মাস ধরে আমাদের প্রায় ১০০ কর্মী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন। সাজসজ্জা থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।’
নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গত ১৬ মার্চ থেকে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এরপর ২২ মার্চ এসএসএফের মিটিংয়ের পর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। কোনো প্রকার অপরিচিত ব্যক্তিকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। মিডিয়াকর্মীসহ কাউকেই অ্যালাউ করা হচ্ছে না।
‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের নিরাপত্তাব্যবস্থা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। শনিবার স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত’, বলেন তিনি।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সব ভিভিআইপি, ভিআইপি ও বিদেশি কূটনীতিক শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসবেন। এ উপলক্ষে প্রতি বছর ঢাকা জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ- এই দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা কাজ করেন। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, ট্রাফিক পুলিশ বক্সসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
‘পাশাপাশি তিন দিন ধরে আমাদের বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’